স্বাস্থ্যখাতে বাংলাদেশের সাফল্য উল্লেখ করার মতো। জাতিসংঘ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বিশ্বব্যাংক সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিবেদনে ফুটে উঠেছে এবং সরকারের সাফল্য ইতোমধ্যেই বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি লাভ করেছে। দেশের সর্বত্র বিস্তার লাভ করেছে ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবার নেটওয়ার্ক। এমন মজবুত অবকাঠামোর ওপর দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের মাত্রার ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে। জনবল বৃদ্ধি, অবকাঠামোর উন্নয়ন, মাতৃ ও শিশু মৃত্যু হ্রাস, ঔষুধের সরবরাহ বৃদ্ধি, কমিউনিটি ক্লিনিক চালু, স্বাস্থ্য খাতে ডিজিটাল বাংলাদেশ কার্যক্রম ইত্যাদি উন্নয়নমূলক উদ্যোগ গ্রহণ করার ফলে বর্তমানে এই খাতের উন্নয়ন সম্পূর্ণই দৃশ্যমান।
বাংলাদেশ পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেখানে সরকারিভাবে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হয়ে থাকে। বিশ্বের কোথাও এমন সুযোগ সুবিধা নেই। কেবল শহরে নয়, বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামেও এখন রয়েছে কমিউনিটি ক্লিনিক, যাতে গ্রামের মানুষ সহজেই সাস্থসেবা নিতে পারে। আওয়ামী লীগ সরকার ইতোমধ্যেই প্রায় ১৫ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করে। এছাড়া উপজেলা পর্যায়ে রয়েছে বড় হাসপাতাল, যা সারা দেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতের উন্নয়নে রেখেছে ব্যাপক ভূমিকা। ইতোমধ্যেই সরকার ১০ হাজার ডাক্তার নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করেছে, এর মধ্যে আগামী দুই মাসেই নিয়োগ পাবেন পাঁচ হাজার ডাক্তার।
এক বক্তব্যে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের উন্নতি বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে দেশের স্বাস্থ্যখাতকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তিনি দেশের ভেঙে পড়া চিকিৎসা সেবাকে পুনরুজ্জীবিত করেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরের সরকারে জাতির পিতা দেশের হাসপাতালসমূহের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, ডাক্তার, নার্স নিয়োগসহ গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নেন।’ প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন ‘আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করে জাতির পিতার প্রদর্শিত পথেই দেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে পরিকল্পনা গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়নে কাজ শুরু করে।’
বর্তমানে বাংলাদেশে শিশু মৃত্যু হ্রাস পেয়ে প্রতি হাজার ৩৯ তে দাড়িয়েছে। ২০০৭ সালে যা ছিল ৬৫। মাতৃ মৃত্যু হ্রাস পেয়ে বর্তমানে প্রতি লক্ষ জীবিত জন্মে ১৯৪-এ দাঁড়িয়েছে। ২০০১ সালে তা ছিল ৩২০। অর্থাৎ বাংলাদেশে শিশু ও মাতৃ মৃত্যু হ্রাসের ক্ষেত্রে যথেষ্ট অগ্রগতি লাভ করেছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ১.৩৭। ২০০৮ সালে তা ছিল ১.৪১। বাংলাদেশ মহিলা প্রতি গড় সন্তান গ্রহণের হার বর্তমানে ২.৩। ২০০৭ সালে তা ছিল ২.৭। মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়ে এখন ৬৯ বছর হয়েছে। ৫টি নতুন মেডিকেল কলেজে (কিশোরগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, সাতক্ষিরা, গাজীপুর এবং কুষ্টিয়া) শিক্ষা কার্যক্রম চালু করেছে। মেডিকেল কলেজ ও জেলা হাসপাতালগুলোতে প্রায় ২,৫০০ শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। মাতৃদুগ্ধ বিকল্প শিশু খাদ্য আইন-২০১৩ প্রণয়ন করা হয়েছে। গর্ভবতী মায়েদের মোবাইল প্রযুক্তির মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় গর্ভ ও প্রসূতি সেবা প্রদান চালু করা হয়েছে। এছাড়া পোলিওমুক্ত বাংলাদেশ, মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি- ইত্যাদিই প্রমাণ করে স্বাস্থ্যসেবা খাতে সরকারের সফলতা।
স্বাস্থ্য খাতে ডিজিটাল বাংলাদেশ এই অগ্রযাত্রায় ভবিষ্যত বাংলাদেশ হয়ে উঠবে আরো স্বাস্থ্য সৌন্দর্যে উজ্জ্বল!