বান্দরবানে ভূট্টা চাষে সাফল্য আসছে

বান্দরবানের লামায় উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় এবং ব্যক্তি উদ্যোগে এবছর ১৪০ হেক্টর ভুট্টার চাষ হয়েছে। গতবছর হেক্টর প্রতি ফলন হয়েছে ৫.৬ টন। বছর আরো উন্নত জাতের বীজ ‘হাইব্রিড সুপার সাইন ও হীরা’ বপনের ফলে হেক্টর প্রতি ফলন বেড়ে ৭.০ থেকে ৭.৫ টন পর্যন্ত হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন লামা কৃষি অফিসের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাশ।
এছাড়া ব্যক্তি উদ্যোগে আরো ৬০জন কৃষক ভুট্টা চাষ করেছেন। ভাল ফলনের আশায় কৃষককে উন্নত জাতের ভুট্টা বীজ দেয়া হয়েছে। ‘হাইব্রিড সুপার সাইন ও হীরা’ এই দুই জাতের ভুট্টা এবছর চাষ করেছে কৃষকরা। গতবছর ১৩০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করে কৃষকরা লাভবান হওয়ায় এবছর আরো অনেকে ভুট্টা চাষে সম্পৃক্ত হয়েছেন।
সরজমিনে লামা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ইতিমধ্যে ভাল ফলন এসেছে ভুট্টা গাছে। প্রতিটি ভুট্টা গাছে একাধিক মোচার উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে ।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে ১৪০ হেক্টরে জমিতে ২৩০ জন কৃষক ভুট্টা চাষ করেছেন। এরমধ্যে রাজস্ব খাত থেকে প্রদর্শনী প্লটে ২০জন ও প্রনোদনা খাত থেকে ১৫০ জন কৃষককে বীজ, সার, পরিচর্যা খরচ, কারিগরী সহায়তা ও সাইনবোর্ড দেয়া হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুরে আলম বলেন, বেলে দোঁ-আশ ও দোঁ-আশ মাটি ভুট্টা চাষের জন্য উপযোগী। বাংলাদেশে ভুট্টার চাষ দ্রুত বাড়ছে। উৎপাদনের পাশাপাশি আমরা কৃষকের উৎপাদিত ভুট্টা বিক্রয়ের নিশ্চয়তা দেয়ার জন্য ফিড এগ্রো ইন্ডাট্রিজ এর সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। তারা প্রতি কেজি ভুট্টা ২৫ থেকে ২৮ টাকায় কৃষকের কাছ থেকে ক্রয় করবে।

ভুট্টা চাষী আনোয়ার হোসেন, জমির মিয়া ও ক্যহ্লাচিং মার্মার সাথে কথা বলে জানা যায়, যদি কোন প্রকৃতিক বিপর্যয় আঘাত না করে তবে প্রতি শতকে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকার ভূট্টা বিক্রি করা যাবে।

ভুট্টা একটি অধিক ফলনশীল দানাজাতীয় শস্য। ধান ও গমের তুলনায় ভুট্টার পুষ্টিমাণ বেশি। এতে প্রায় শতকরা ১১% আমিষজাতীয় উপাদান আছে। আমিষে প্রয়োজনীয় অ্যামিনো এসিড, ট্রিপটোফ্যান ও লাইসিন অধিক পরিমাণে রয়েছে। এছাড়া হলদে রঙের ভুট্টাদানার প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ৯০ মিলিগ্রাম ভিটামিন-এ রয়েছে। ভুট্টার দানা মানুষের খাদ্য হিসেবে এবং ভুট্টা গাছ ও সবুজ পাতা উন্নত মানের গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। হাঁস-মুরগি ও মাছের খাদ্য হিসেবে এর যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে।