পাটের বিকল্প আঁশ হিসেবে এক নতুন ফাইবারের কথা জানালেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম। ফার্মেসি বিভাগে বিশেষ ধরনের এক মাইক্রো-অর্গানিজম নিয়ে গবেষণার ফল হিসেবে বের হয়ে আসে এই নতুন তথ্য।
এ বিষয়ে অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাটের বিকল্প প্রাকৃতিক এই আঁশ অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে আমি আবিষ্কার করতে পেরেছি, এই দাবি করা বোধ হয় অনুচিত হবে। সত্যি বলতে বর্তমানের এই আবিষ্কার, দীর্ঘকাল যাবত চলমান আমার ভিন্ন এক গবেষণার বাই প্রোডাক্ট মাত্র।
তিনি বলেন, বেশ কিছু বছর যাবত রহস্যময় কিছু মাইক্রো-অর্গানিজম নিয়ে রিসার্চ করছি। বিশেষ ধরনের এই মাইক্রো-অর্গানিজম থেকে অত্যন্ত শক্তিশালী metabolites (এনজাইম) নিঃসৃত হয়, যার অন্যতম বিশেষ ক্ষমতা হলো, মৃত গরু-ছাগলের চামড়ার সঙ্গে লেগে থাকা চর্বি বা sub-cutaneous fat কিছুদিনের মধ্যে সম্পূর্ণ dissolve বা দ বীভূত করে ফেলতে পারে।
এই গবেষণার ফল পরবর্তী সময়ে খুব কার্যকরভাবে মানুষের জন্য ব্যবহার করা যাবে বলে ধারণা প্রকাশ করেন তিনি। এন্টিবায়োটিকের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গবেষণাকারী এই অধ্যাপক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে চলমান রিসার্চের এই ফলাফল, আমাকে ভীষণভাবে নাড়া দিয়েছে। আমার বিশ্বাস, উন্নতমানের কোনো ল্যাবরেটরিতে এই মাইক্রো-অর্গানিজম থেকে নির্গত নির্যাসের পিউরিফিকেশন নিয়ে কাজ করার সুযোগ পাওয়া গেলে এমন একটি ওষুধ আবিষ্কার করা সম্ভব, যা দিয়ে মানবদেহের রক্তনালীর ভেতরে অস্বাভাবিকভাবে জমাট বাঁধা চর্বিকে, নন-ইনভেসিভ ওয়েতে (non-invasive way) এবং নিরাপদভাবে গলিয়ে ফেলা সম্ভব হবে। আর সেটা করা সম্ভব হলে, হার্ট ডিজিজ এবং ব্রেন স্ট্রোকের মতো জীবন ধ্বংসী রোগের প্রতিরোধ এবং চিকিৎসা অধিকতর সহজ হয়ে আসবে।
এই গবেষণায় রহস্যময় এই মাইক্রো-অর্গানিজম থেকে নিঃসৃত metabolites কে ব্যবহার করে জীবন্ত সবুজ গাছ বা প্লান্টের লিপিড বা ফ্যাট গলিয়ে ফেলে চমৎকার রেশমি ধরনের প্রাকৃতিক আঁশ তৈরি করেছেন অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম। যার নাম দিয়েছেন তিনি আর-কে ফাইবার। তিনি বলেন, হয়তো আমার উদ্ভাবিত এই মাইক্রো-অর্গানিজম থেকে নিঃসৃত metabolites কে ব্যবহার করে পাট থেকে আরো উজ্জ্বল ও অধিক শক্তিশালী পাটের আঁশ পাওয়া সম্ভব।