খামারবাড়িতে জাতীয় সবজি মেলা শুরু

ফার্মগেট কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের বাংলাদেশ চত্বরের জাতীয় সবজি মেলায় সরকারি-বেসরকারি প্রায় ৮০টি স্টল ও ৪টি প্যাভিলিয়ন স্থান পেয়েছে। মোট স্টলের মধ্যে ১০ শতাংশ সবজি বীজ ও চারা গাছ প্রদর্শন করছে। আর বাঁকি স্টলে রয়েছে হরেক রকমের দেশি-বিদেশি সবজি। সবমিলে ১৫৬ প্রকারের সবজি প্রদর্শিত হচ্ছে সেখানে।

আজ রবিবার সকাল থেকে তিন দিনব্যাপী এ সবজি মেলা শুরু হয়েছে। ‘সারা বছর সবজি চাষে, পুষ্টি-স্বাস্থ্য-অর্থ আসে’ এ প্রতিপাদ্য নিয়ে তৃতীয়বারের মতো এ মেলা আয়োজন করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান মেলার উদ্বোধন করেন। আর মেলা উপলক্ষে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত সেমিনারে অতিথির ছিলেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। তিনি বলেন, আমরা দেশে সবজি চাষে বিপ্লব ঘটিয়েছি। ঘরবাড়ি, ক্ষেত-খামারের পাশাপাশি পানিতেও ভাসমান সবজি চাষ হচ্ছে। এখন আমরা যে স্বপ্ন দেখছি শূন্যেও সবজি উদ্যান হবে। হাওয়ায় যদি উদ্যান করা যায় আমরা তাও করবো। তিনি আরো বলেন, আগে শুধু শীতকালে সবজি পাওয়া যেত। কিন্তু এখন আমাদেও দেশে ১২ মাসই সব ধরনের সবজি পাওয়া যায়। আর দেশে সবজির প্রকারেরও শেষ নেই।

মেলা ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চাষ করা হরেক রকমের সবজি দেখার পাশাপাশি এ বিষয়ে দর্শনার্থীরা বিস্তারিত জানতে পারছেন। দেশের বিভিন্ন এলাকায় উৎপাদিত সব রকমের সবজির সমারোহ রয়েছে। বেশিভাগ স্টলে সবজি পিরামিড বা নৌকার আকারে দৃষ্টিনন্দিত উপস্থাপন করা হয়েছে। মেলায় দেশে উৎপাদিত বিদেশি সবজি যেমন নানা রঙের ক্যাপসিকাম, বেবিকন, ব্রকলি, চেরি টমেটো, বোম্বাই মরিচ রয়েছে। তেমনি রয়েছে চিরচেনা বাঁধাকপি, পেঁয়াজ পাতা, শিমের বিচি, লাল আলু, তাল বেগুন, চালকুমড়া, ঢেকি শাক, সাচিশাক, পালং শাক, লেটুসপাতা, সুগন্ধি কচু, লাউসহ বিভিন্ন সবজি।

মেলায় অংশগ্রহণকারীরা জানান, দর্শনার্থীরা দেশীয় বিভিন্ন টাককা সবজি অপেক্ষাকৃত কমদামে কিনতে পারছেন এখানে। এ ছাড়া প্রক্রিয়াজাত সবজি সম্পর্কে জানতে পারছে। এখানে বাড়ির ছাদে কিংবা ছোট জায়গায় কীভাবে সফলতার সঙ্গে সবজি উৎপাদন করা যায় জানানো হচ্ছে।

শিক্ষার্থী এনামুল বলেন, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সবজি ও সবজি উৎপাদন প্রযুক্তি তুলে ধরেছে। ফলে আনেক কিছু জানতে পারছি। কারণ আগে জানতাম না এতো অল্প জায়গাতে সবজি চাষ সম্ভব। আর সঠিক সবজি নির্ধারণ করতে পারলে আয়ও করা সম্ভব।

মেলা উপলক্ষে বেআইবি অডিটোরিয়ামে ‘পরিবর্তিত জলবায়ুতে পুষ্টি নিরাপত্তা ও দারিদ্র্যবিমোচনে বছরব্যাপী নিরাপদ সবজি চাষ’ বিষয়ক এক সেমিনারও অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. হারুন অর রশীদ। সভাপতিত্ব করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মঈনউদ্দিন আবদুল্লাহ। সেখানে জানানো হয়, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ৮ লাখ ৫৩ হাজার ৫০০ হেক্টরে সবজি চাষ করা হয়। উৎপাদন হয়েছে এক কোটি ৬০ লাখ ৪২ হাজার ৩০০ টন সবজি।