ভারতকে হারিয়ে সাউথ এশিয়া সেরা বাংলাদেশের মেয়েরা

রেফারির শেষ বাঁশি বাজা মাত্রই লাল-সবুজ পতাকা নিয়ে মাঠে ঢুকে পড়লো কিশোরীরা। মিডফিল্ডার মনিকা চাকমাকে দেখা গেল হাউ-মাউ করে কাঁদতে। হঠাত যে কেউ ভাবতে পারেন মনিকার চোখে জল পরাজয়ের; ভুল! সাফের পুরো টুর্নামেন্টে অসাধারণ ফুটবলের কারুকার্য ছড়িয়ে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা বাংলাদেশ। শামসুন নাহারের একমাত্র গোল ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে শ্রেষ্ঠত্ব এখন গোলাম রব্বানী ছোটনের দলের।

ফাইনালের আগে বাফুফের প্রচারণা, মাইকিং বেশ কাজেই লেগেছে বলা চলে। সংবাদ মাধ্যমগুলোরও অনুরোধ ছিল মাঠে বসে বাংলাদেশকে সমর্থন জানানোর। তাতে কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামের গ্যালারি ভর্তি দর্শক দেখা গেল। হাতে হাতে থাকলো লাল-সবুজ পতাকা, ভুভুজেলা। কণ্ঠে থাকলো ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ রব।

ম্যাচের আগের দিন গোলাম রব্বানী ছোটনের প্রতিশ্রুতি ছিল অলআউট ফুটবলের। কোচের প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ম্যাচের শুরু থেকেই ততপর লাল-সবুজদের অনূর্ধ্ব-১৫ বাঘিনীরা। রেফারি ফাউলের বাঁশি না বাজালে প্রথম মিনিটেই গোল থাকতে পারতো বাংলাদেশের। মার্জিয়ার দূরন্ত পাসে তহুরাকে গোল বঞ্চিত করেছেন রেফারি।

২২ মিনিটে সহজ সুযোগ হাতছাড়া আনুচিং মগিনির। ভারতগোলরক্ষককে একা পেয়েও সময় মত বলে শট না নিতে পারায় গোল হয়নি বাঘিনীদের। ৩২ মিনিটে অসাধারণ ড্রিবলিংয়ে ডি-বক্সে ঢোকা তহুরার শট অল্পের জন্য খুঁজে পায়নি লক্ষ্য।

একের পর আক্রমণের ফলাফলা পাওয়া গেল বিরতির ঠিক তিন মিনিট আগে। বামপ্রান্ত দিয়ে তহুরার ক্রস গোলবারে খুঁজে নেয় আনুচিংকে। জার্সি নাম্বার ৯ ফরোয়ার্ডের শট ভারত ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে ফিরলে অসাধারণ এক ভলিতে ৪২ মিনিটে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেন ডিফেন্ডার শামসুন নাহার।

ম্যাচের ৬১ মিনিটে অসাধারণ দলীয় প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে তহুরা সঠিক ফিনিশিং না পাওয়ায়। নিজ অর্ধ থেকে অধিনায়ক মারিয়ার দারুণ পাস ভারতের ডিফেন্ডারদের কাটিয়ে ডি-বক্সে পৌঁছে যান তহুরা। পরাস্ত করেছিলেন গোলরক্ষককেও। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজের ভুলেই পাওয়া হয়নি গোল।

শেষদিকে খেলা ছড়িয়েছে উত্তেজনা। দুদলই একাধিকবার প্রতিপখের অর্ধে ছড়িয়েছে আতঙ্ক। কিন্তু তাতে খুব একটা ক্ষতি হয়নি বাংলাদেশের। বরং শেষদিকে একাধিক সুযোগ হাতছাড়া না হলে জয়টা বড় ব্যবধানই হতে পারতো বাংলাদেশের।