প্রশংসায় ভাসছে ওই দুই শিশু, লেখাপড়ার দায়িত্ব নিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

বয়সে ছোট হলেও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে দুর্ঘটনার হাত থেকে ট্রেন রক্ষা করে সকলের প্রশংসা কুড়িয়েছে রাজশাহীর দুই শিশু। তাদের নিয়ে গর্বিত ও উচ্ছ্বসিত অভিভাবক ও শিক্ষকরা। ক্ষুদে শিশুদের এমন কাজে তাদের সংবর্ধনার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। অভিভূত হয়ে তাদের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার ঝিনা গ্রামের দরিদ্র দিনমজুর সুমন হোসেন আর মহিদুল ইসলামের বাড়িতে বেড়েছে এলাকাবাসীর ভিড়। পরিচিত-অপরিচিত সবাই যাচ্ছে এই বাড়ির দুই তুখোড় শিশুকে এক নজর দেখতে।

৬ বছরের শিহাব এবং ৭ বছরের লিটোন। ছোট বেলার খেলার সাথী। শান্তশিষ্ট এই শিশু দুটি তাদের তাৎক্ষণিক বুদ্ধিমত্তায় বাঁচিয়ে দিয়েছে অনেকের প্রাণ এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ। শিশুদের এই সাফল্যে গর্বিত তাদের অভিভাবকরা। তাদের মা ও বাবার বলেন, আমাদের ছেলেরা যে এত বড় কাজ করবে আমরা কখনো ভাবতেই পারিনি।’

সোমবার সকালে আড়ানী রেলস্টেশনের ৪০০ মিটার পূর্বদিকে ঝিনা রেলগেট এলাকায় খেলতে গিয়ে রেললাইনের বেশ কয়েকটি স্লিপার খুলে পড়ে থাকতে দেখে শিহাব ও টোটন। এসময় হঠাৎ ট্রেন আসতে দেখে তারা। পরে উপস্থিতবুদ্ধি কাজে লাগিয়ে নিজেদের লাল মাফলার উড়িয়ে ট্রেন থামানোর সংকেত দেয় তারা। এতে ৩২ বগির তেলবাহী ট্রেনটি দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায়। শিহাব ও লিটোন জানায়, লাইন ধরে আসার সময় দেখি লাইন ভাঙ্গা। তখন আমরা লাল মাফলার এনে দুইজন দুই প্রান্ত ধরে ট্রেন থামায়”। বিপুল পরিমাণ এ জাতীয় সম্পদ রক্ষায় অবদান রাখার জন্য দুই শিশুকে সংবর্ধনা দেয়ার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। তারা বলেন, রেল কর্তৃপক্ষ থেকে তাদের সংবর্ধনা দেয়া উচিত।

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া এই দুই শিশুর এমন কাজে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন তাদের শিক্ষকরাও। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রেললাইন দেখলে, সংকেত দেয়ার শিক্ষা বিদ্যালয়েই শিশুদেরকে দেয়া হয়েছে বলে জানান তারা। এদিকে, দুর্বার এই শিশুদের উপস্থিত বুদ্ধিতে খুশি হয়ে তাদের পড়াশোনার দায়িত্ব নেয়ার কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলম।