শীতকালীন সবজি চাষে লাভবান হওয়ায় কৃষকদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণির লোকজন সবজি চাষের দিকে ঝুঁকছেন।
টাঙ্গাইলের কৃষি অফিস বলছে, শীতকালীন সবজিতে রোগ-বালায় কম এবং কৃষকরা সহজেই লাভবান হওয়ায় তারা বেশি বেশি সবজির চাষ করছেন।
সরেজমিনে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বৈল্লা, এনায়েতপুর, গালা ও মাগুরাটা, সদুল্লাপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, কৃষকরা শীতকালীন সবজির ক্ষেত পরিচর্যা করছেন।
পুরুষের পাশাপাশি মহিলারাও অংশ নিচ্ছেন এ কাজে। অনেকেই ক্ষেত থেকে শীতকালীন সবজি তুলে বাজারজাতকরণের প্রস্তুতি নিতে দেখা যায়। অনেকেই আবার আমন ধানের লোকসান পুষিয়ে নিতে শীতকালীন সবজি চাষা করেছেন বলেও জানিয়েছেন কৃষকরা।
এ বিষয়ে কথা হয় এনায়েনপুর গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘এবার আমি ১ বিঘা জমিতে শীতকালীন শাকসবজি চাষ করেছি। এতে আমার প্রায় ৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমি প্রায় ৭ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করেছি।’
তিনি আরও বলেন, শীতকালীন সবজি চাষ করতে কম খরচ লাগে, এতে সহজেই লাভবান হওয়া যায়। আমি বিগত বছর গুলোতেই এ সবজি চাষ করে বেশ লাভবান হয়েছিলাম। আশা করছি এ বছরও আমি লাভবান হব।
একই এলাকার আরেক কৃষক জয়নাল আবেদীন পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, আমি ১৫ শতাংশ জমিতে বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজি চাষ করেছি। এতে আমার খরচ হয়েছে ৩ হাজার টাকা। এখন পর্যন্ত বাজারে বিক্রি করেছি ৯ হাজার টাকা।
তিনি আরও বলেন, অন্যন্য কৃষকরা শীতকালীন সবজি চাষ করে লাভবান হয়েছেন। এ দেখে আমি প্রায় ২ বছর ধরে শীতকালীন সবজি চাষাবাদ শুরু করি। এতে বেশ লাভবান হওযায় আমি এবারও শীতকালীন সবজি আবাদ শুরু করেছি। আমাদের গ্রামের অনেকেই এখন শীতকালীন সবজি চাষাবাদ করছেন।
সদুল্লাপুর গ্রামের কৃষক সৈয়দ আলী পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘আমি ১ বিঘা জমিতে কপি এবং লাল শাক চাষ করেছি। শীতকালীন সবজিতে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম হয়। এতে সহজেই কৃষকরা লাভবান হতে পারে। আমন ধান চাষাবাদ করে অনেকের ক্ষতি হয়েছে। তারাও শীতকালীন সবজি চাষাবাদ করছেন লোকসান পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন।’
মোতালেব মিয়া নামের আরেক কৃষক পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘আমি ৩ বিঘা জমিতে লাউ, বেগুন, ডাটা, কচু, ধনিয়া ইত্যাদি আবাদ করেছি। এখন পর্যন্ত আমি কোনো শাকসবজি বিক্রি করেনি। তবে গত বছর শীতকালীন সবজি চাষ করে লাভবান হয়েছিলাম।’
তিনি বলেন, বাজারে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর সার, বীজ ইত্যাদির দাম বেশি। যদি এসব জিনিসের দাম কম থাকতো, তাহলে কৃষকরা আরও বেশি লাভবান হতেন।
এদিকে, টাঙ্গাইল শহরের পার্কবাজার ও বটতলা বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে উঠেছে শীতকালীন শাকসবজি, আর এই শীতকালীন সবজি কিনছেন ক্রেতারা।
এ বিষয়ে কথা হয় টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক আবু আদনানের সঙ্গে। তিন পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, শীতকালীন সবজিতে পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হয়। এতে সহজেই কৃষকরা শীতকালীন শাকসবজি চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। শীতকালীন শাকসবজিতে খরচ কম লাভ বেশি।
তিনি বলেন, টাঙ্গাইলে কিভাবে আরও শীতকালীন সবজির উৎপাদন বাড়ানো যায়, সে লক্ষে আমরা কাজ করছি। মাঠ পর্যায়ে কৃষি অফিসাররা কাজ করছেন।
এছাড়া বিভিন্ন কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়াসহ বিভিন্ন সহযোগিতা করা হয়েছেও বলে তিনি উল্লেখ করেন।