পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং অর্থনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনায় দেশে কুমিরের প্রজনন ও চাষের অপার সম্ভবনা রয়েছে। বিশেষ করে সুন্দরবনের মাঝে বয়ে যাওয়া নদীগুলোসহ সুন্দরবন অঞ্চল ও কুয়াকাটায় গড়ে ওঠা পর্যটন শিল্পাঞ্চলকে ঘিরে আধুনিক খামার স্থাপনের মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে কুমির চাষের যথেষ্ট উপযুক্ততা রয়েছে। খামার স্থাপন ও প্রাকৃতিক পরিবেশে সংরক্ষণের মাধ্যমে কুমিরের উৎপাদন বাড়ানো যায়। তবে ব্যক্তিপর্যায়ে কিছু উদ্যোগ থাকলেও সরকারের পরিকল্পনায় বিষয়টি এখনো জায়গা পায়নি।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) সূত্রে জানা গেছে, খামারে কুমিরের উৎপাদন একটি লাভজনক খাত হিসাবে বিবেচিত হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে কুমিরের বাণিজ্যিক চাষ হয়ে আসছে। অষ্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক উন্নত দেশে কুমির অপ্রচলিত খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ওসব দেশে পর্যটন শিল্প হিসেবেও কুমিরের খামার স্থাপন করা হয়েছে। কুমিরের চামড়া অনেক অভিজাত সামগ্রী তৈরিতে ব্যাপকভাবে সমাদৃত।
সুন্দরবন অঞ্চলে কুমিরের আধুনিক খামার স্থাপনের উপযুক্ততা বিবেচনায় সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীগুলোর দু’পাশে তারের জালের বেড়া দিয়ে কুমির চাষ শুরু করা যেতে পারে। এছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে কুয়াকাটাসহ বেশ কিছু স্থানে পর্যটন শিল্প গড়ে উঠেছে। এসব অঞ্চলে কুমিরের খামার স্থাপন করা সম্ভব হলে ওসব পর্যটন শিল্প আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। যা জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণসহ জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপুর্ণ অবদান রাখবে। এ ধরণের প্রাকৃতিক পরিবেশে কুমিরের চাষ সহজ হবে।
প্রাকৃতিক পরিবেশে কুমিরের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রাখতে দ্রুত কুমিরের প্রজনন ক্ষেত্র সংরক্ষণ, বাসস্থান ও প্রাকৃতিক চাষ কৌশল উন্নয়ন করতে হবে। এজন্য বেসরকারি উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার পাশাপাশি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার বিশেষ দরকার।
মৎস্য অধিদপ্তরের বাংলাদেশের নির্বাচিত এলাকায় কুচিয়া ও কাঁকড়া চাষ এবং গবেষণা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. বিনয় কুমার চক্রবর্তী বলেন, ময়মনসিংহের ভালুকায় ব্যক্তিগত পর্যায়ে কুমিরের খামার আছে। তবে কুমির নিয়ে বর্তমানে মৎস্য অধিদপ্তরের কোনো প্রকল্প বা ভাবনা নেই। তবে সরকারিভাবে কুমিরের আধুনিক খামার স্থাপন করা যেতে পারে।