কুমিল্লার মাঠে-ঘাটে ও বাড়ির লতায় ঝুলছে অবহেলার পেস্তা আলু

পেস্তা আলু দক্ষিণ কুমিল্লায় মোম আলু নামে পরিচিত। সম্প্রতি এ আলু চাষ কুমিল্লার গ্রামাঞ্চলে জনপ্রিয় হচ্ছে। কুমিল্লার প্রায় মাঠে-ঘাটে ও বাড়ির লতায় শোভা পাচ্ছে অনাদর ও অবহেলার মধ্যেও বেড়ে ওঠা এই মোম আলুর। যা পেস্তা আলু নামে সমধিক পরিচিত।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সূত্র মতে, পেস্তা আলু গাছ চাষ করার জন্য উষ্ণ আবহাওয়া দরকার। জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ বেলে দোআঁশ ও দোআঁশ মাটিতে চাষ ভালো হয়। আলু এবং মাটির নিচের কন্দ দ্বারা পেস্তা আলুর চারা তৈরি করা হয়। এ আলুর একটি গাছে প্রায় ২০০টি আলু জন্ম হতে পারে। এ আলু গাছে তেমন কোনো পোকার আক্রমণ হয় না। চাষে তেমন খরচও লাগে না।

এ আলুর চাষের বিষয়ে লাকসামের মনপাল গ্রামের জান্নাতুল ফেরদাউস বলেন, এ আলুকে স্থানীয়ভাবে মোম আলু বলা হয়। রান্নার পর মোমের মতোই নরম হয়ে যায়। খেতেও সুস্বাদু। গাছের খুব বেশি যত্ন নিতে হয় না। কয়েকটি আলু বীজ আত্মীয়ের বাড়ি থেকে এনে লাগিয়ে দিয়েছি। পানি, সার, কীটনাশক কিছুই দেইনি। ঘরের পেছনে পরিত্যক্ত জায়গায় বীজ লাগিয়েছি। গাছগুলো সুপারি ও নারিকেল গাছে ছড়িয়ে পড়েছে। লতায় লতায় আলু ঝুলে আছে। এ আলু দিয়ে পরিবারের সবজির চাহিদা পূরণ করা হচ্ছে।

চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ২নং উজিরপুর ইউনিয়নের ৯নং মানিকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুলতানা নাছরিন বলেন, এই পেস্তা আলু আগুনে পুড়িয়ে খেলে খুব সুস্বাদু লাগে। সিদ্ধ করে খেলেও মন্দ লাগে না।

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোসলেহ উদ্দিন বলেন, কুমিল্লায় পারিবারিকভাবে মেঠে আলু ও পেস্তা আলু যুগ যুগ ধরে চাষ হচ্ছে। প্রায় বিনা পুঁজিতে গৃহস্থরা এসব আলু চাষ করে পরিবারের চাহিদা মেটাচ্ছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কুমিল্লার জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার ড. শাহিনুল ইসলাম বলেন, এই পেস্তা আলু অনেক পুষ্টিকর। চাষে ব্যয়ও কম। দেশের কিছু অঞ্চলে এই আলুর বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু হয়েছে। কুমিল্লায় পারিবারিকভাবে পরিত্যক্ত জায়গায় চাষ হচ্ছে। আলুটির চাষ ছড়িয়ে দেয়ার বিষয়ে আমরা কাজ করার উদ্যোগ নেব।