খামারে কর্মসংস্থান হয়েছে ২০ নারী-পুরুষের

যে কোনো উদ্যোগের শুরুতে আসে অনেক বাধা-বিপত্তি। এসব গায়ে না মেখে লেগে থাকলে সফল হওয়া যায়। যারা সফল হন, তাদের অনুসরণ করলে আরও নতুন উদ্যোগ শুরু হয়। নানা খাতের সেসব সফল উদ্যোক্তাকে নিয়ে ধারাবাহিক আয়োজন

‘মাছে-ভাতে বাঙালি’ প্রবাদটি কোনো এক সময় সত্য হলেও বর্তমানে তা অনেকটাই ম্লান। এখন মাছের কিছুটা অভাব থাকলেও ভাতের অভাব নেই

বাঙালির ঘরে। তারপরও থেমে নেই মৎস্য উৎপাদনে সরকারের আন্তরিকতা। মৎস্য অধিদফতর বেশ কিছু কর্মসূচি নিয়েছে। উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণে উৎসাহ দিচ্ছে। সে ধারাবাহিকতায় এগিয়ে চলা মৎস্যচাষি হলেন ঝিনাইদহের পোড়াহাটি ইউনিয়নের উত্তর কাস্টসাগরা গ্রামের উদ্যোক্তা লাভলি ইয়াসমিন।

২০০১ সালে গ্রামের একটি পুকুর লিজ নিয়ে রুই, কাতল, মৃগেল, সিলভারকার্প মাছের চাষ শুরু করেন লাভলি। প্রথম বছরই সফল হন। পরের বছর আরও দুটি পুকুর নিয়ে নতুন উদ্যমে শুরু করেন মাছ চাষ। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে আট একর জমিতে রুই, কাতল, মৃগেল, সিলভারকার্প, গ্রাসকার্প, সাদা পুঁটি, তেলাপিয়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করছেন। তিনি এখন স্বাবলম্বী। পাশাপাশি তার মৎস্য খামারে কর্মসংস্থান হয়েছে ২০ নারী-পুরুষের।

তিন সন্তানের জননী লাভলি ইয়াসমিন জানান, তার স্বামী ২০০১ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত বেকার ছিলেন। ওই সময় সন্তানদের লেখাপড়া করিয়েছেন মৎস্য চাষ থেকে আয় করা অর্থ দিয়ে। এখন তার বড় ছেলে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার। মেজ ছেলে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার; আর ছোট ছেলে ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল কমার্স কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র।

২০১২ সালের ১৩ জুন কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় সরকারিভাবে মালয়েশিয়ায় প্রশিক্ষণে অংশ নেন তিনি। বর্তমানে মাগুরা ও ঝিনাইদহ শহরের দুটি জমির মালিক তিনি। গ্রামে করেছেন পাকা ঘর। তার সফলতা দেখে এলাকার অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠেছেন মাছ চাষে।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তিমির বরণ মণ্ডল বলেন, সদর উপজেলা মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে লাভলি ইয়াসমিনকে সব ধরনের প্রযুক্তিগত সহযোগিতা দেওয়া অব্যাহত রয়েছে।