পেঁপে চাষে সফলতা

সারি সারি পেঁপেগাছ। প্রতিটি গাছে ঝুলে আছে অসংখ্য কাঁচা পেঁপে। থোকার মাঝে মাঝে দুই-চারটি পাকা পেঁপেও ঝুলছে। ২ মাস ধরে গাছ থেকে পেঁপে তুলে বিক্রি করলেও গাছের পেঁপে যেন শেষই হচ্ছে না। নরসিংদীর পলাশ উপজেলার চরসিন্দুর ইউনিয়নের চরআলীনগর গ্রামের রবিন ভূইয়া তার ৫০ শতক জমিতে গড়ে তুলেছেন এ পেঁপে বাগান। ৫০ হাজার টাকা খরচ করে গড়ে তোলা বাগান থেকে এরই মধ্যে দেড় লাখ টাকার পেঁপে বিক্রি করা হয়েছে। আরও ২ লাখ টাকার পেঁপে বিক্রি করা যাবে বলে আশা করছেন রবিন ভূইয়া। এতে করে ১ বছরে খরচ বাদে তার লাভ হবে ৩ লাখ টাকা। তার সফলতা দেখে গ্রামের অনেকেই পেঁপে বাগান করার আগ্রহ প্রকাশ করছেন।
রবিন জানান, ৩ বছর আগে বাড়ির পাশে ২০ শতক জমিতে পেঁপে চারা রোপণ করেন তিনি। চারাগুলো বড় হয়ে গাছে প্রচুর ফলন দিলে তার আশা জাগে বাগানটি আরও বড় করার। তিনি আরও ৫০ শতক জমিতে পেঁপে চারা রোপণ করেন। চারা রোপণের পর নিয়মিত পরিচর্যা ও সার-সেচ দেয়ায় প্রতিটি গাছে ফলন আসে ৫০ থেকে ৬০টিরও অধিক পেঁপে। পরিপূর্ণ অবস্থায় প্রতিটি পেঁপের ওজন হয় প্রায় ৩ কেজি। স্থানীয় অনেক পাইকার ব্যবসায়ী তার বাগান থেকে কাঁচা ও পাকা পেঁপে নিতে আসেন।
রবিন আরও বলেন, চারা লাগানোর ৩ মাসের মাথায় গাছে ফল ধরলেও তা ছিঁড়ে দেই। পরে আবারও ফল ধরলে ৮ মাসের মাথায় গাছ থেকে পেঁপে তোলা শুরু করি। এরই মধ্যে প্রায় দেড় লাখ টাকার পেঁপে বিক্রি করেছি। কিছুদিন থেকে গাছেই পেঁপে পাকিয়ে বিক্রি করছি। বাজারে কাঁচা পেঁপের তুলনায় পাকা পেঁপের চাহিদা বেশি। দামও বেশ ভালো। আশা করছি, আরও ২ লাখ টাকার মতো পেঁপে বিক্রি করতে পারব।
চরসিন্দুর ইউনিয়নের উপকৃষি কর্মকর্তা শাহ নেওয়াজ জানান, অপেক্ষাকৃত উঁচু জমিতে পেঁপে চাষ করতে হয়। সাধারণত এসব জমিতে ধান চাষ হয় না। গ্রামের মানুষ এসব জমি ধানের বীজতলা অথবা শাকসবজি আবাদের জন্য ব্যবহার করেন। এতে লাভ হয় খুব কম। অথচ ওই জমিতে পেঁপে চাষ করলে বছরে ১ বিঘা জমি থেকে লাখ টাকা অনায়াসে আয় করা যায়। রবিনের সফলতা দেখে এলাকার অনেকেই এখন পেঁপে চাষে ঝুঁকছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম জানান, পেঁপে দ্রুত পচনশীল না হওয়ায় ব্যবসায়ীরা এটি অনেক দিন সংরক্ষণ করতে পারেন। বাজারে পেঁপের প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
এ বছর উপজেলার ৭৫ হেক্টর জমিতে পেঁপের আবাদ হয়েছে। আমাদের কৃষি বিভাগের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা এ নিয়ে কৃষককে উদ্বুদ্ধসহ বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিচ্ছেন।