বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ সবুজ ঘাসে ঢাকা। পরিত্যক্ত আগাছা ঘেরা জমিতে লাঙ্গলের ফলার দাগ মুছে গেছে অনেক আগেই। কৃষিবিদদের প্রেরণায় এ জমিতে পরীক্ষামূলক তাইওয়ানের পেঁপে চাষ করে প্রথমবারেই তাক লাগানো সাফল্যে পেয়েছেন গফরগাঁওয়ের কৃষক নজরুল ইসলাম বুলবুল। পতিত জমিতে পেঁপে চাষ এনে দিয়েছে বুলবুলের জীবনে নতুন গতি। উপজেলার রাওনা ইউনিয়নের দীঘা গ্রামের পুলাদিয়ার টেক এলাকায় কৃষক নজরুল ইসলাম বুলবুলের বাড়ি। এখানকার যাতায়াত ব্যবস্থা নাজুক হওয়ায় অনেকটা দ্বিধা নিয়ে প্রায় ৩ একর জমি চাষ উপযোগী করে পেঁপের বাগান করেন তিনি। পানির দরে পেঁপে বিক্রি করলেও খরচ বাদে প্রায় ৩ লাখ টাকা লাভ পেয়েছেন বুলবুল।
এ সফল পেঁপে চাষি বুলবুল জানান, বাড়ির পাশে তার প্রায় ২ একর জমি অনাবাদি হয়ে পড়ে থাকত। এছাড়া পুকুরের পাড় হিসেবে আরও প্রায় ১ একর জমি পড়ে ছিল। ওইসব অনাবাদি জমি মিলিয়ে চলতি বছর প্রায় ৩ একর জমিতে তিনি কৃষিবিদদের পরামর্শে পরীক্ষামূলক পেঁপে চাষ করেন। পেঁপে বীজ, চারা রোপণসহ দেড় লাখ টাকা খরচ হয় তার। পেঁপের ফলনও হয় আশাতীত। এলাকায় পাকা সড়ক না থাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই নাজুক। ফলে পুরো পেঁপে বাগান তিনি পাইকারদের কাছে সাড়ে ৪ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন। তিনি বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকলে তিনি পেঁপে বাগানটি অন্তত সাড় ৬ লাখ থেকে ৭ লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারতেন। প্রথমবারই পেঁপে চাষ করে ব্যাপক সফলতা ও আর্থিকভাবে বেশ লাভবান হওয়ায় বুলবুল আরও বেশি পতিত জমি নিয়ে পেঁপে চাষের পরিকল্পনা করছেন বলে জানান। পেঁপে চাষ করে আশাতীত সাফল্যে বেজায় খুশি তার পরিবার। এরই মধ্যে এলাকার অনেক বেকার যুবক পেঁপে চাষে আগ্রহ প্রকাশ করে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ এলাকাবাসী বুলবুলের পেঁপে বাগান পরিদর্শন করে জানান, বুলবুলের এ প্রচেষ্টা এলাকায় রীতিমতো কৃষি বিপ্লব ঘটিয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এস এস ফারহানা হোসেন বলেন, কর্মের প্রতি আগ্রহ ও প্রচেষ্টাই কৃষক বুলবুলের মূলধন। এ পেঁপে চাষি বুলবুল বেকার যুবকদের কাছে রোলমডেল হতে পারেন। এছাড়া তিনি জানান, পেঁপে চাষ শুধু লাভজনকই নয়, সব শ্রেণী-পেশার মানুষের খাদ্যতালিকায় সবজি হিসেবে পেঁপে প্রিয় তরকারি। পুষ্টিগুণে ভরা পাকা পেঁপে খুবই উপকারী।