লেবুজাতীয় ফল মাল্টার বাণিজ্যিক আবাদ বাড়ছে বগুড়ায়। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ২০১৫ সালে চাষ শুরুর পর এরই মধ্যে কয়েকটি বাগান থেকে মাল্টা পাওয়া গেছে। আগামী বছর থেকে স্থানীয়ভাবে চাষকৃত এ ফল বাজারে বিক্রি হবে। স্বাদ মিষ্টি হওয়ায় এর চাহিদাও ভালো থাকবে।
জানা গেছে, ২০১৫ সালে সদর, নন্দীগ্রাম, শাজাহানপুর, কাহালু ও শেরপুর উপজেলায় কয়েকজন ব্যক্তি নিজ উদ্যোগে মাল্টার বাণিজ্যিক চাষ শুরু করেন। চাষ বাড়াতে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কলমের মাধ্যমে বারি-১ জাতের চারা তৈরি করে কৃষকদের কাছে বিতরণ করছে। প্রতিটি ৫০ টাকা করে এ পর্যন্ত প্রায় নয় হাজার চারা বিক্রিও হয়েছে। চারা বিতরণের পাশাপাশি প্রশিক্ষণ, চাষপ্রণালি নিয়ে আলেচনা ও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। কৃষকদের ১৫ কেজি টিএসপি সার, ১৫ কেজি এমপিও, ১৮ কেজি জিপসাম এবং একটি করে সাইনবোর্ড বিতরণ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত জেলায় ১৫ হেক্টর জমিতে মাল্টার চাষ করা হয়েছে। কিছু কিছু বাগানে মাল্টার পাশাপাশি অন্য ফলও চাষ করা হচ্ছে।
শেরপুর উপজেলার ভাটরা গ্রামের মো. মামুন জানান, ২০১৫ সালে তিনি মাল্টার চাষ শুরু করেন। বাগান থেকে ফল সংগ্রহের পর স্বজনদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। আগামী বছরে বেশ ভালো ফলন পাওয়া যাবে।
নন্দীগ্রাম উপজেলার ভাটরা ইউনিয়নের টাকুরাই গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, ৫৪ শতক জমির ওপর তিনি মাল্টার বাগান গড়ে তুলেছেন। মাল্টা চাষের পাশাপাশি তিনি ওই একই জমিতে সাথি ফসল হিসেবে ২৫০টি পেয়ারা, ২২০টি লেবু, ২০টি আমগাছ, পাঁচটি কমলা, ১ হাজার ২০০টি লিচু গাছ লাগিয়েছেন।
বগুড়া সদরের শাখারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান সফিক জানান, তার ইউনিয়নের গোপালবাড়ির মো. পাশা ও কদিমপাড়ার বেলাল হোসেন মাল্টার চারা সংগ্রহের পর বাগান তৈরি করেছে। এসব বাগান থেকে আগামী বছর ফলন পাওয়া যাবে। উত্পাদন ভালো হলে স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পর অন্যান্য এলাকায় পাঠানো হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, দেশের অন্যান্য এলাকা থেকে যে মাল্টা পাওয়া যায়, তার স্বাদ টক। কিন্তু বগুড়ার মাল্টা মিষ্টি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হর্টি কালচার সেন্টার বনানী কার্যালয়ের উপপরিচালক আব্দুর রহিম জানান, একটি সবল গাছ থেকে ১০০ থেকে ১৫০টির বেশি মাল্টা পাওয়া যাবে। প্রাথমিকভাবে দেখা গেছে, বগুড়ায় উত্পাদিত সাত থেকে আটটি মাল্টায় এক কেজি ওজন হয়। এ মাল্টার স্বাদ মিষ্টি। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ২৫টি এবং ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ২৭টি মোট ৫২টি মিশ্র বাগান তৈরি করা হয়েছে। দিন দিন মাল্টা চাষের পরিধি আরো বাড়বে।