ব্যয় হবে সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা, অর্থায়ন করবে জাইকা
আন্তর্জাতিক মানের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতের পাশাপাশি যাত্রী পরিবহনের সক্ষমতা বাড়াতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিধি সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে যাত্রীদের জন্য নতুন একটি টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। এ লক্ষ্যে ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্পের প্রস্তাব পাঠিয়েছে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে চীন সরকার প্রায় ১১ হাজার ২১৪ কোটি টাকা ঋণ দেবে। অবশিষ্ট অর্থ সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ (প্রথম পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পটির বিষয়ে এরই মধ্যে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভার সুপারিশের আলোকে প্রকল্পে প্রস্তাবনা (ডিপিপি) পুনর্গঠন করা হয়েছে। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় উপস্থাপন করা হবে। একনেকের অনুমোদন পেলে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেয়া হচ্ছে।
প্রকল্পটির প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, দেশে বর্তমানে আটটি বিমানবন্দর আছে। এর মধ্যে তিনটি আন্তর্জাতিক ও পাঁচটি অভ্যন্তরীণ। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি দেশের অন্যতম। বাংলাদেশে প্রায় ১৭টি বিমান সংস্থার বিমান চলাচল করছে। এ বিষয়ে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি আছে ৫২ দেশের সঙ্গে। বছরে প্রায় ৮০ লাখ যাত্রী এ বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারেন। বিমান পরিবহন চাহিদা বিবেচনায় এটির অবকাঠামো পর্যাপ্ত নয়। বিদ্যমান বিমান প্যাসেঞ্জার টার্মিনালটির মাধ্যমে আধুনিক ও বড় বিমান অবতরণ ও উড্ডয়নের জন্য বিমানবন্দরটি যথেষ্ট নয়।
এতে আরও বলা হয়, ২০১৫ সালে কোরিয়া এবং সিঙ্গাপুরের দুইটি পরামর্শক ফার্ম বিমানবন্দরটি সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়নের জন্য একটি সমীক্ষা পরিচালনা করে। এর মাধ্যমে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত মাস্টারপ্লান আপডেট করা হয়েছে। এছাড়া নতুন তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণসহ অন্যান্য অবকাঠামো ডিজাইন করা হয়েছে। এয়ার ট্রাফিকের বর্ধিত চাহিদা বিবেচনায় বর্তমান টার্মিনালটির ধারণক্ষমতা ২০১৮ সালের মধ্যে পরিপূর্ণ হবে।
প্রকল্পের আওতায় নিরাপত্তা উপকরণসহ ২ লাখ ২৬ হাজার বর্গমিটার আয়তনের নতুন প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। ট্যানেলসহ ৬২ হাজার বর্গমিটার মাল্টিলেবেল কার পার্কিং, ৪১ হাজার ২০০ বর্গমিটার নতুন কার্গো কমপ্লেক্স, ৫ হাজার ৯০০ বর্গমিটার ভিভিআইপি কমপ্লেক্স, ১ হাজার ৮৪০ বর্গমিটার রেসকিউ অ্যান্ড ফায়ার ফাইটিং স্টেশন নির্মাণ করা হবে।
পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, কমিশনের পিইসি সভায় প্রকল্পটির জন্য একজন পূর্ণকালীন পরিচালক নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন তদারকিতে একটি শক্তিশালী ইউনিট গঠনেরও তাগিদ দিয়েছে কমিশন। তাছাড়া প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় অন্যান্য দেশের পরিবর্তে বাংলাদেশের সঙ্গে তুলনা করা, প্রাইজ কন্টিনজেন্সি খাতে ব্যয় কমিয়ে আনার সুপারিশ করা হয়েছে।
তবে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সরকার ও জাইকার মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠক এবং জাইকার স্টাডি টিম প্রকল্পের ব্যয় প্রাক্কলন ও ডিপিপি তৈরি করেছে। এর ভিত্তিতেই মিউনিটস অব ডিসকাশন (এমওডি) স্বাক্ষরিত হয়েছে।