আমের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের খ্যাতি প্রাচীনকাল থেকেই। তবে নতুন করে সম্ভাবনারদ্বার খুলে দিয়েছে মাল্টার চাষ। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, একদিন দেশের ফল রপ্তানিতেও যুক্ত হবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মাল্টা। এ ফলটি চাষ হচ্ছে মূলত লাল মাটি খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জের বরেন্দ্র এলাকায়।
মাঠ ঘুরে এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাল্টা চাষে ইতোমধ্যে ঘটে গেছে বিপ্লব। এবার এজেলায় ১৫০ জন কৃষক ৩০০ বিঘা জমিতে চাষ করেছেন মাল্টা। অনেক শিক্ষিত বেকারসহ অনেকেই বাণিজ্যিকিভাবে মাল্টা চাষে এগিয়ে এসেছেন এবং অনেকেই উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। এর মধ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও হর্টিকালচার সেন্টারের উদ্যোগে প্রদর্শনী হিসাবেও প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে মাল্টা চাষ করা হয়েছে চলতি মৌসুমে। এ ছাড়া প্রয়াস মানবিক উন্নয়ন সোসাইটির কৃষি ইউনিটের আওতায় সদস্যদের মাঝে মাল্টার চারা বিতরণ করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মনামিনা কৃষি খামারে দেখা গেছে, ছোট ছোট গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে মাল্টা। কোনটার রং হলুদ তো কোনটা আবার সবুজ। রং নিয়ে কৃষি কর্মকর্তারা জানান, হলুদের চেয়ে সবুজ রংয়ের মাল্টাতে পুষ্টিসহ অন্যান্য গুণাগুণ বেশি। পোকা মাকড় বা রোগবালাইয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে যেসব মাল্টার গায়ে ব্যাগ দিয়ে মুড়িয়ে রাখা হয়েছিল সেসবের রং হলুদ হয়েছে বলেও জানান তারা।
মনামিনা কৃষি খামারের প্রধান কর্তা মতিউর রহমান জানান, বর্তমানে তার বাগানে প্রায় ৩ হাজার মাল্টা গাছ আছে। এর মধ্যে ২ হাজার ৫শ’ গাছে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার মাল্টা রয়েছে। এক হালি মাল্টা বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা। বাজারজাত করার জন্য কোন সমস্যা নেই। ক্রেতারা বাগান থেকেই ১৪০ টাকা হালি হিসাবে কিনে নিয়ে যাচ্ছে বলেও তিনি জানান। তিনি আরও জানান, তার তৈরী মাল্টা চারা স্থানীয়সহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে। তার খামারে গড়ে প্রায় নারীসহ ৫০ জন শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলী বর্তমানে সৌখিন কৃষক মাহবুবুর রহমান বাচ্চু জানান, ঝিলিম ইউনিয়নে তিনি ৩ বিঘা জমিতে মাল্টার চাষ করেছেন।
এ ছাড়াও সদর উপজেলার বুলনপুরে আকবর আলী, গোমস্তাপুরে খুরশিদ আলম বাচ্চুর ৪০ বিঘা, মাহবুবুর রহমান বাচ্চুর ৩ বিঘাসহ আগামী বছর অন্তত ৫০০ বিঘার বাগান থেকে মাল্টা পাওয়া যাবে।