আগাম শিম চাষ করে মেহেরপুরের চাষিরা ব্যাপক লাভবান হচ্ছেন। ভালো ফলন ও দাম পাওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। ধান-পাট চাষের অব্যাহত ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তাদের এ শিম চাষ। বিগত বছরের তুলনায় এবার তারা শিমের বেশি দাম পাচ্ছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং আরো এক মাস ভালো দাম পেলে প্রতিটি শিম চাষির ঘরে আনন্দের বন্যা বইবে এমন প্রত্যাশা তাদের।
মেহেরপুর সদর উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের কাঁঠালপোতা, সোনাপুর, পিরোজপুর, টুঙ্গি ও গহরপুরসহ কয়েকটি গ্রামের মাঠে প্রচুর শিম চাষ হয়েছে। মাঠের পর মাঠ শিম ফুলে ভরে উঠেছে। চাষি শিম ক্ষেতে সেচ ও বীজ দিচ্ছেন। করছেন শিম গাছের পরিচর্যা। কেউ তুলছেন শিম। সদর উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের কাঁঠালপোতা গ্রামের মাঠে সাড়ে ৭’শ বিঘা ও টুঙ্গি গ্রামের মাঠে প্রায় আড়াই’শ বিঘা জমিতে শিম চাষ হয়েছে। এছাড়া সদর উপজেলার আমদহ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মাঠ ও মুজিবনগর উপজেলার মহাজনপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মাঠে প্রচুর শিম চাষ হয়েছে।
জেলার পিরোজপুর গ্রামের চাষি আকাশ দেড় বিঘা জমিতে শিম চাষ করেছেন। তিনি জানান, এ পর্যন্ত তার ৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। শিমের আবাদ শেষ হওয়া পর্যন্ত তার দেড় বিঘা জমির পিছনে ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। গত সপ্তায় তিনি প্রথম দিনে ২৫ কেজি শিম তুলেছেন। মেহেরপুর বাজারে ওই শিম ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন। তিনি এখন প্রতি সপ্তাহে শিম তুলবেন। তিনি বলেন, মাঘ মাস পর্যন্ত ক্ষেত থেকে শিম তোলা যাবে। ভালো দাম পেলে বিঘা প্রতি ৬০ হাজার টাকার শিম বিক্রি করতে পারবেন।
মেহেরপুর ছোট বাজারের সবজি ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন জানান, বাজারে খুচরা শিম বিক্রির জন্য আসছে না বললেই চলে। গ্রামের চাষিরা বিকেলে বিকেলে শিম নিয়ে আড়তে দিচ্ছে। রাতে ট্রাক ভর্তি হয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশালসহ বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে ওই শিম।
মেহেরপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, এ বছর সদর উপজেলায় ২০৭ হেক্টর জমিতে শিম চাষ হয়েছে। এর মধ্যে শুধু পিরোজপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মাঠে ১৬০ হেক্টর জমিতে শিম রয়েছে।