খুলনায় উৎপাদন হবে ৪০০ কোটি টাকার সবজি

গেল মাসের মাঝামাঝি সময়ের বৃষ্টিতে বীজতলা নষ্ট হওয়ায় মৌসুমের প্রথম দফায় হোঁচট খান শীতের সবজিচাষি। চলতি মাসের শুরুতে লালশাক, পালংশাক, মুলা ও ফুলকপির আবাদ শুরু করেছেন তারা। নভেম্বরের শেষ দিকে স্থানীয় বাজারে শীতের সবজি উঠতে শুরু করবে। আর সেই লক্ষ্য নিয়ে ব্যস্ত জেলার দেড় লাখ চাষি। মৌসুমে ৯ উপজেলায় ৪০০ কোটি টাকার সবজি উৎপাদন হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী।

আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে করে একদিকে যেমন বেগুন, লাউ ও কাঁচামরিচ গাছ নষ্ট হয়েছে; পাশাপাশি নষ্ট হয়েছে বীজতলাও। বৃষ্টির কারণে ক্ষেতের সবজি নষ্ট হওয়ায় বেগুন, লাউ, করলা, লালশাক ও পালংশাকের দাম বেড়ে যায়। বাজারের চাহিদা মেটাতে কৃষক আগেভাগেই বীজতলা তৈরি শুরু করেন। সেপ্টেম্বরের বৃষ্টিতে বীজতলা নষ্ট হয়ে যায়। ডুমুরিয়া উপজেলার কালীকাপুর গ্রামের চাষি ওলিয়ার রহমান শেখ জানান, তিনি বিটি বেগুনের চাষ করেছেন। গেলবার ভালো উৎপাদন হওয়ায় এবার চাষের পরিধি বেড়েছে। ফুলতলা উপজেলার পূর্ব মশিয়ালি গ্রামের চাষি ঈসা খাঁ জানান, লাউ উৎপাদন শুরু করেছেন। গেল বছর ৩ হাজার ২০০ গাছে প্রায় ৩ লাখ টাকার শাক বিক্রি হয়। মহানগরীসংলগ্ন তেলিগাতির চাষি মোকসেদ ফকিরের দেয়া তথ্যানুযায়ী, তিনি লাউ, করলা, টমেটো ও শসার চাষ করেছেন। ঘেরের আইলে টমেটো ভালো উৎপাদন হবে বলে তিনি আশাবাদী। তিনি কীটনাশকমুক্ত সবজি উৎপাদন করেন।
ডুমুরিয়া উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা অরুণা ম-ল জানান, কুলবাড়িয়া, মঠবাড়িয়া, চাকুন্দিয়া, গোবিন্দকাঠি, বরাতিয়া, আরশনগর, মাগুরঘোনা, বেতাগ্রাম, হাজীবুনিয়া, বান্দা, কালীকাপুর, সেনপাড়া, খর্ণিয়া ও ভদ্রাদিয়া গ্রামে ফুলকপি, শিম, টমেটো, বেগুন, মুলা, বাঁধাকপি ও পালংশাকের আবাদ হয়েছে। ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, ৬৫ হাজার চাষি শীতের সবজি আবাদে ব্যস্ত।
পাইকগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ এইচ এম জাহাঙ্গীর আলম জানান, সাড়ে ৪৯ হাজার চাষি লালশাক, মুলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, পালং ও টমেটোর আবাদ করেছেন। এখানকার সফল চাষি মাহমুদকাঠি গ্রামের সাইদুর রহমান ও মালত গ্রামের মোঃ মোশারফ হোসেন। উপজেলায় ৭০০ হেক্টর জমিতে শীতের আবাদ হয়েছে। ফুলতলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রিনা খাতুন জানান, আলকা, গাড়াখোলা, দামোদর, মশিয়ালি, ধোপাখোলা, যুগ্নিপাশা, বেজেরডাঙ্গা, জামিরা ও ছাতিয়ান গ্রামের ২০০ হেক্টর জমিতে লাউ, ওলকপি, টমেটো ও বাঁধাকপির চাষ হয়েছে। তার দেয়া তথ্যানুযায়ী, গাড়াখোলা গ্রামের আকরাম গাজী, মশিয়ালি পূর্বপাড়ার হায়দার আলী, মাতমডাঙ্গা গ্রামের আবদুল আজিজ ও আবদুল মজিদ সফল চাষি।