ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার আমুয়া বন্দর সংলগ্ন বিষখালীর শাখা হলতা নদীর উপর দক্ষিানাঞ্চলের কাঙ্খিত আমুয়া সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পভুক্ত সেতুটি অচিরেই আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হতে যাচ্ছে।
ঝালকাঠির রাজাপুর-কাঠালিয়া-আমুয়া-বামনা-পাথরঘাটা আঞ্চলিক মহা সড়কের আমুয়া অংশে ২১৭.৬৮ মিটার দীর্ঘ সেতু এবং সেতু সংলগ্ন উভয় পাশে ২.২০ কিলোমিটার সংযোগ সড়কের জন্য ৩৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যায়ে সেতুটির নির্মান কাজ শেষে হয়েছে। খান কনষ্ট্রাকশন ফার্ম নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ২০১৭ সালের ৩ মার্চ নির্মান কাজ শেষ করেছে। সরকার এই প্রকল্পের মধ্যে জমি অধিগ্রহনের জন্য ৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিকদের ক্ষতিপুরণ প্রদান করেছে। ২০১৩ সালের ১ জুন সেতু নির্মান কাজ শুরু হয়েছিল।
কাঙ্খিত এ আমুয়া সেতুটি নির্মানের ফলে দক্ষিনাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা, ব্যবসা-বানিজ্য সহ আর্থ সামাজিক উন্নয়নে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। সেতুটি নির্মানের কাজ শেষ হওয়ার সাথে সাথে এ অঞ্চলে ছোট-বড় ও মাঝারি ধরনের শিল্প গড়ে উঠতে শুরু করেছে। সেতুর উপর দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হলে বরিশালের সাথে পিরোজপুর ও সাগরকন্যা বরগুনা জেলা এবং জেলাগুলির সংশ্লিষ্ট উপজেলার সাথে সহজ যোগাযোগ ও নৈকট্যতা বেড়ে যাবে, এমনটি আসা করছে এই অঞ্চলের সর্বস্তরের মানুষ ও জনপ্রতিনিধিরা।
তাছাড়া এ সেতুটি চালু হলে ঢাকা, চট্রগ্রাম, খুলনা সহ সাড়া দেশের সাথে সড়ক যোগাযোগ সহজ হবে। পুরা দক্ষিনাঞ্চলের সাথে ব্যবসা-বানিজ্যে নুতন ধারা সৃষ্টি হবে। এ সব অঞ্চলে গড়ে উঠবে বড় বড় মিল, কল-কারখানা সহ বিভিন্ন স্থাপনা। ইতিমধ্যেই অনেকে রাস্তার দু’পাশে কল-কারখানা করার জন্য জমি ক্রয় করছে। ফলে হু হু করে বেড়ে গেছে এসব এলাকার জমির দাম। উদ্বোধনের আগেই সেতুর দু’মাথায় চায়ের দোকান সহ নানা ধরনের শতাধিক দোকান গড়ে ওঠেছে।
ঝালকাঠি-১ (কাঠালিয়া-রাজাপুর) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব বজলুল হক হারুন এই গুরুত্বপুর্ণ সেতুটি নির্মানের জন্য সংসদে ১৮বার দাবী করেছেন। এছাড়াও সরকার আগামী দিনের চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখে এ আঞ্চলিক মহা সড়কের ঝালকাঠি অংশের ৩১ কিলোমিটার প্রসাস্তকরণ সহ উন্নয়নে ১১৪ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
কাঠালিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মো. গোলাম কিবরিয়া সিকদার জানান, আমুয়া সেতু চালু হলে কাঠালিয়াসহ পুরা দক্ষিনাঞ্চলের জনসাধারনের জীবন যাত্রার মান বৃদ্ধি পাবে। এ সেতুটি নির্মানে সব চেয়ে বেশী অবদান আমাদের নেতা স্থানীয় সাংসদ বিএইচ হারুন সাহেবের। তিনি সংসদে বার বার এ সেতুটির কথা উল্লেখ করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্পভুক্ত হিসাবে সেতুটি নির্মান হয়েছে। তাই আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রতি চির কৃতজ্ঞ।
কাঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডা. শরীফ মুহম্মদ ফয়েজুল আলম জানান, খুব শিগ্রই সেতুটি উদ্বোধন হবে। আর সেতুটি উদ্বোধন হলে দক্ষিানাঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নসহ যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমল পরিবর্তন ঘটবে।
ঝালকাঠি সড়ক বিভাগের বিভাগীয় উপ-প্রকৌশলী শেখ নাবিল হোসেন জানান, সেতুটি উদ্বোধনের ব্যাপারে আমাদের উর্ধতন কর্তৃপক্ষ মাননীয় শিল্পমন্ত্রীর সাথে যোগাযোগ রাখছেন সময় হলে সিদ্ধান্ত নিবেন।
আমুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আমিরুল ইসলাম ফোরকান সিকদার জানান, আমরা যতটুকু জানি মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সেতুটি উদ্বোধন করবেন। তবে সেতুর দক্ষিন প্রান্তে একটি আয়রন ব্রিজ রয়েছে। ঐ ব্রীজের পর কিছু রাস্তা ভাঙ্গা সেটুকু মেরামত হলে হয়ত শিগ্রই আমুয়া সেতু উদ্বোধন হবে বলে আমরা আশা করছি। আমুয়া শহীদ রাজা ডিগ্রী কলেজের শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান ছবি জানান, আমরা এত দিন জীবনের ঝুকি নিয়ে খেয়ার নৌকায় নদী পারাপার করছি অনেক সময় ক্লাস মিস করছি আর এ ব্রিজটি নির্মানের কারনে এখন আমাদের কলেজে যেতে খুব সহজ হয়েছে।