প্রতিবন্ধী শিশুদের মেধা বিকাশ ও লেখাপড়ায় বিশেষ অবদান রাখছে ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার আলী আকবর মেমোরিয়াল প্রতিবন্ধী স্কুল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র। ২০১৩ সালে কিছু সংখ্যক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও ধীরে ধীরে ২২০ জন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে এই স্কুলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ স্কুলে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত বিনা খরচে পড়তে পারে একজন প্রতিবন্ধী।
সম্প্রতি সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, বাক-শ্রবণ ও শারীরিক প্রতিবন্ধীরা এ স্কুলে লেখাপড়া করছে। যে যেমন তাকে সেভাবেই পড়াশোনা শেখাচ্ছে স্কুলের শিক্ষকরা। শিক্ষার্থীরাও খুব আগ্রহ নিয়ে পড়াশোনা করছে ।
জানা যায়, এ স্কুলের শিক্ষার্থীরা প্রতিবারই স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস ও ২১ ফেব্রুয়ারির মতো জাতীয় অনুষ্ঠানগুলোর বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে একাধিকবার ১ম ও ২য় পুরস্কার পেয়েছে। এ প্রতিবন্ধী স্কুলে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত বিনা খরচে পড়তে পারবে একজন প্রতিবন্ধী। এছাড়াও স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা স্থানীয় সংসদ সদস্য লিটা নিজের খরচে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের খাতা কলম বই স্কুলের পোশাক কিনে দেন। শিক্ষকরা জানান, এখানকার প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা সুন্দর সুন্দর ছবি আঁকতে, গাইতে ও নাচতে জানে। শুধু তাই নয়, তারা জানে কীভাবে একজন মানুষকে সম্মান জানাতে হয়।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক রেহেনা আক্তার জানান, সাধ্যমতো চেষ্টা করছি প্রতিবন্ধীদের মেধাবিকাশ করাসহ প্রাথমিক পর্যায়ের ধাপগুলো পার করার। তিনি আরও বলেন, এবারে পঞ্চম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষায় আমাদের ৫ জন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে। আশা রাখি আগামীতে এ সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও তিনি আরও জানান, প্রতিষ্ঠানটি বড় করার জন্য মহলবাড়ী নামক স্থানে এক বিঘারও বেশি পরিমাণের একটি জায়গা কিনেছেন এমপি লিটা। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। তিনি আরও জানান, বর্তমানে স্কুলটিতে ১৭ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা প্রতিবন্ধীদের পাঠদান করছেন। এর মধ্যে একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষকও রয়েছেন। তিনি প্রতিবন্ধীদের গান শেখান এবং অক্ষরজ্ঞান দিয়ে থাকেন।
এ প্রসঙ্গে রানীশংকৈল ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব তাজুল ইসলাম বলেন, প্রতিবন্ধীদের নিয়ে এমপি লিটা একটি ভালো উদ্যোগ নিয়েছেন যা প্রশংসনীয়। এ ধরনের প্রতিষ্ঠান করে সমাজের অবহেলিত শিশুদের মেধাবিকাশ ও পাঠদানের মতো মহৎ কাজে আমাদের সবার এগিয়ে আসা উচিত।