ধানের দুটি নতুন জাত পাচ্ছে কৃষক

জিংক সমৃদ্ধ ও প্রতিকূল পরিবেশে মানিয়ে নিয়ে বেশি ফলন দিতে পারে এমন দুটি নতুন জাতের ধান পাচ্ছে কৃষকরা। এর মধ্যে জিংক সমৃদ্ধ ধান উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং প্রতিকূল পরিবেশে মানিয়ে নিয়ে বেশি ফলন দেওয়া ধানের উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) বিজ্ঞানীরা।

বিনা ধান-৭ এর সাথে ভিয়েতনামের একটি আয়রন সমৃদ্ধ জাতের সংকরায়ণ করে উদ্ভাবন করা হয় বিনা ধান-২০। জাতের জীবনকাল ১২৫ থেকে ১৩০ দিন। হেক্টর প্রতি গড় ফলন ৪ দশমিক ৪৮ টন। সর্বোচ্চ ফলন ৭ টন। জিঙ্কের পরিমাণ ২৭.৫ পিপিএম, যা এ পর্যন্ত ছাড়কৃত অন্যান্য ধানের চেয়ে তুলনামূলকভাবে বেশি।

এ ছাড়া ইরান থেকে সংগৃহীত জাত আমল-৩ এর সাথে ব্রি ধান-২৮ এর সংকরায়ণের মাধ্যমে নতুন জাত ব্রি ধান-৮১ উদ্ভাবন করা হয়েছে। ব্রি ধান-৮১ বোরো মওসুমের জনপ্রিয় ও মেগা জাত ব্রি ধান-২৮ এর একটি পরিপূরক জাত। এটি প্রতিকূল পরিবেশে ঢলে পড়া প্রতিরোধী। বৃষ্টি ও বাতাসে এ ধানের গাছ ঢলে পড়বে না।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, জাতটির জীবনকাল ১৪০ থেকে ১৪৫ দিন। ব্রি ধান-৮১ জাতে অ্যামাইলোজ রয়েছে শতকরা ২৬ দশমিক ৫ ভাগ এবং এতে উচ্চ মাত্রায় আমিষ রয়েছে। এর চালের আকার লম্বা ও চিকন হওয়ায় ব্যাপক জনপ্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এমনটি মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। জাতটিতে সুগন্ধ ছাড়া উন্নত গুণমানসম্পন্ন ধানের সকল বৈশিষ্ট্যই বিদ্যমান থাকায় এর রপ্তানি সম্ভাবনাময়। নতুন উদ্ভাবিত জাতটির গড় ফলন হেক্টরে ৬ থেকে সাড়ে ৬ টন। উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে এটি হেক্টরে ৮ টন ফলন দিতে সক্ষম।

এ নিয়ে ব্রি উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল ধান জাতের সংখ্যা হলো ৮৬টি। এর মধ্যে ছয়টি হাইব্রিড ধানের জাত রয়েছে। দেশের আশি ভাগের বেশি ধানি জমিতে এ সব ধান জাতের চাষ হয় এবং এ থেকে আসে দেশের মোট ধান উত্পাদনের শতকরা ৯১ ভাগের বেশি।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রধান বীজতত্ত্ববিদ মোঃ আজিম উদ্দিন বলেন, জাতীয় বীজ বোর্ডের ৯৩তম সভায় বুধবার এ সব জাত কৃষকদের মাঝে ছাড়করণের অনুমোদন দেওয়া হয়। এ দুটি ধানের জাত ছাড়াও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত আলুর ২টি জাত, গমের ১টি জাত ছাড়করণের অনুমোদন দেওয়া হয়।

তথ্য অনুযায়ী, বারি আলু-৭৮ ও বারি আলু-৭৯ জাত দুটি কন্দাল ফসল গবেষণা কেন্দ্র কর্তৃক উদ্ভাবিত। জাতটির উত্স পেরুতে অবস্থিত আন্তর্জাতিক আলু গবেষণা কেন্দ্র। জাতগুলো উচ্চ ফলনশীল, লবণাক্ত সহিষ্ণু, আলু লম্বাটে, মধ্যম আকারের।

বারি গম-৩৩ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা উদ্ভাবন করেন। দুটি সিমিটের জাতের সাথে সংকরায়ণের মাধ্যমে উচ্চ ফলনশীল গমের জাতটি উদ্ভাবন করা হয়। জাতটি ব্লাস্ট ও মরিচা রোগ প্রতিরোধী, পাতার দাগ রোগ সহনশীল। জাতটি তাপসহিষ্ণু বিধায় ডিসেম্বর মাসে বীজ বুনলেও অন্যান্য জাতের তুলনায় বেশি ফলন দেয়।