বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়নে ১০ ক্ষেত্রে ব্যাপক সংস্কার চলছে

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দুই অংকের ঘরে নিতে বিনিয়োগের বিকল্প নেই। আর বিনিয়োগ টানতে অনুকূল ব্যবসা পরিবেশ প্রয়োজন। সেটা করতে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিনিয়োগের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত ১০টি সেবাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে ব্যাপক সংস্কার কার্যক্রম চলছে। বাংলাদেশের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের যৌথ চেম্বারের এক বৈঠকে এসব কথা বলেছেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম।
ঢাকায় কানাডা বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ক্যানচ্যাম) এ বৈঠকের আয়োজন করে। রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এ ধরনের তৃতীয় এ বৈঠকে বিভিন্ন যৌথ চেম্বারের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। ক্যানচ্যাম সভাপতি মাসুদ রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন জাপান বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (জেবিসিসিআই) সভাপতি সালাহ উদ্দিন কাশেম খান।
বিদেশি চেম্বার প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের ব্যবসা পরিবেশ নিয়ে বিভিন্ন অসঙ্গতির কথা তুলে ধরেন। তারা বলেন, কেবল কোন যৌথ চেম্বারের পক্ষে এ দেশে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা প্রয়োজন। আমলাতান্ত্রিক মানসিকতা এখনো বিডার কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়ে গেছে অভিযোগ করে তারা বলেন, বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়নে প্রকৃত সংস্কার চাইলে বিডায় বেসরকারি খাতের অভিজ্ঞদের আনুপাতিক হারে নিয়োগ দানের ব্যবস্থা করতে হবে।
ক্যানচ্যাম সভাপতি বলেন, প্রথাগত শ্রমঘন শিল্প থেকে ডিজিটাল অর্থনীতে রূপান্তর চলছে বাংলাদেশের অর্থনীতির। এ পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে ডিজিটাল অবকাঠামো এবং এ খাতে দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন আবশ্যক হয়ে পড়েছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৬ বা ৭ অংকের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে বিনিয়োগ নীতি এবং অবকাঠামোতে উন্নয়ন প্রয়োজন। এসবের উন্নয়নে বিডা এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে ১৫ দফা সুপারিশ করেন তিনি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা, কুইক রেন্টালের পরিবর্তে বিদ্যুতের জন্য মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নেওয়া, নতুন বিনিয়োগে মূলধনী তহবিলের ব্যবস্থা করা, বিডার ওয়ানস্টপ সার্ভিসের আরও আধুনিকায়ন প্রভৃতি।
বিডা চেয়ারম্যান বলেন, বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় সিঙ্গাপুরের ওয়ানস্টপের আদলে দেশে বিনিয়োগ সহায়ক একটি ওয়ানস্টপ সার্ভিস করছেন তারা। শিগগিরই এটা চালু করা সম্ভব হবে। এতে পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকে উদ্যোক্তারা অনলাইনে আবেদন থেকেই প্রয়োজনীয় সব সেবা পাবেন। যেকোন সমস্যা হলে সরাসরি তাকে জানানোর জন্য উদ্যোক্তাদের প্রতি অনুরোধ রাখেন তিনি। কাজী আমিন বলেন, বাংলাদেশ ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য বিশ্বব্যাপী প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিদম্যান বিদেশি বিনিয়োগকারীরা যে সহজ সেবা পাবেন সেটাও আ্যাাম্বাসেডরের মত কাজ করবে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে। সিঙ্গাপুরের একটি কোম্পানির ৩ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা চলছে। জাপানের উদ্যোক্তারাও আসছেন। সবাইকে সহায়ক সেবা দিতে কাজ করছেন তারা।