ভোলা জেলায় বিনোদনের নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে ‘সজিব ওয়াজেদ জয়’ ডিজিটাল পার্ক। লালমোহন পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের সরকারি শাহাবাজপুর কলেজ মাঠে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ৩ একর জমির উপর পার্কটি স্থাপন করা হয়েছে। এ বছর ১৬ মার্চ বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ‘লালমোহন সজিব ওয়াজেদ জয় পৌর ডিজিটাল পার্ক’র উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলের নামে পার্কটিতে দেশের সবচেয়ে বড় এলইডি টিভি, ফ্রি ওয়াইফাই সুবিধা, রেলগাড়ি, নাগরদোলাসহ ২৬টি রাইডস রয়েছে। প্রযুক্তি নির্ভর, দৃষ্টিনন্দন ডিজিটাল পার্কটিতে প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থীরা ভিড় করে। প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত পার্কটি সকলের জন্য উন্মোক্ত থাকে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য (লালমোহন-তজুমুদ্দিন) নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন আজ সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের মধ্যে ফ্রি ওয়াইফাই সমৃদ্ধ প্রথম ‘সজিব ওয়াজেদ জয়’ ডিজিটাল পার্ক নির্মাণ করা হলো। এখানে দেশের সবচেয়ে বড় ২০ ফিট বাই ৩০ ফিট এলইডি টিভি স্থাপন করা হয়েছে। ফলে শুধু লালমোহন নয় সমগ্র জেলার বিনোদনের নতুন ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। আবার জেলার বাইরে থেকেও অনেক বিনোদনপ্রেমী ভিড় করেন এ পার্কে। বর্তমানে পার্কে থ্রীজি ইন্টানেট চালু থাকলেও অচিরেই তা আরো বাড়ানো হবে বলে জানালেন তিনি।
লালমোহন পৌর মেয়র এমদাদুল ইসলাম তুহিন বলেন, বিগত দিনে এখানে বিনোদনের কোন ব্যবস্থা ছিলো না। এখানকার বাসিন্দারা জেলা সদর বা অন্য উপজেলায় যেত বেড়ানোর জন্য। তবে স্থানীয় সংসদ সদস্য নুরন্নবী চৌধুরী শাওনের উদ্যোগে পৌরসভা ও জেলা পরিষদ যৌথভাবে পার্কটি নির্মাণ করেছে। বিশেষ করে ফ্রি ইন্টারনেট অনেককেই আগ্রহী করে তোলে সজিব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল পার্কে বেড়াতে। এছাড়া সর্ববৃহৎ এলইডি টিভিতে মুভি, খবরসহ বিভিন্ন বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে।
সরেজমিনে পার্কে গিয়ে দেখা যায়, বিশাল মাঠের চারপাশে ওয়াকওয়ে তৈরি করা হয়েছে। পাশের পুকুরের উন্নয়ন করে সৌন্দর্যমন্ডিত করা হয়েছে। তবে সন্ধ্যার পরে বাহারি আলোয় রং ছড়ায় পার্কটিতে। লাল-নীল আলোয় মায়াবী রুপ নেয় ডিজিটাল পার্কে। বিকেল হলেই দল বেধে হাটার জন্য বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ ভিড় করে। এছাড়া বিভিন্ন রাইড’সে বাচ্চাদের আনন্দ করতে দেখা যায়। এখানে কেউবা আসে নির্মল বাতাস গ্রহণের জন্য। অনেকে বেঞ্চে বসে টিভি দেখে। তবে সবচেয়ে বেশি আকর্ষন ফ্রি ইন্টারনেট সুবিধা। তরুণ-তরুণীদের বড় একটি অংশ ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য আসে পর্কে। ইচ্ছেমত প্রযুক্তির আধুনিক সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করা যায় এখানে।
কলেজ ছাত্রী ফারহানা সুলতানা ও সাদিয়া বৃষ্টি বলেন, সব সময় ইন্টারনেট কিনে ব্যবহার করা যায় না। তাই সম্পূর্ণ ফ্রি ওয়াইফাই সুবিধা ভোগ করতেই পার্কে আসা। এতে করে সহজেই প্রযুক্তির মাধ্যমে সারা পৃথিবীর সাথে সম্পৃক্ত হওয়া যায়। জানা যায় বিশ্বের কোথায় কি ঘটছে। রিয়াজ রহমান, জয় দত্ত, আরিফ সাকিল ও সুমন হোসেন বলেন, এতবড় এলইডি টিভিতে ছবি দেখার মজাই আলাদা। তাই তারা বন্ধুরা মিলে বিকেল হলে পার্কে আসেন।
স্থানীয় ব্যংক কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এই শহরে বিগত দিনে হাঁটা বা অনুশীলনের কোন নির্দিষ্ট স্থান ছিল না। পার্কটি হওয়াতে ইচ্ছেমত শরির চর্চা করা যায়। একইসাথে পাবিারিক পরিবেশেও ভ্রমনের সযোগ তৈরি হয়েছে।
এ ব্যাপারে ভোলা প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলম মিঠু জানান, শিক্ষার সাথে বিনোদন ও বিনোদনের সাথে শিক্ষা ওৎপ্রোতভাবে জড়িত। আর সবচেয়ে আকর্ষণীয় শিক্ষা আধুনিক প্রযুক্তি বিষয়ক জ্ঞান। এ তথ্য ও প্রযুক্তিকে তৃনমূল পর্যায়ে পৌঁছে দিতে এবং গণমানুষের দ্বারপ্রান্তে আনতে বিশাল ভূমিকা রাখছে ‘সজিব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল পার্ক। বিশেষ করে বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণে যে পরিকল্পনা তা প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছে এ পার্ক।