মেহেরপুরের কলা চাষিদের ভাগ্য বদল!

একবার চারা রোপণ করে ২৪ মাসে তিনবার ফলন পাওয়া যায়। খরচ কম; লাভ বেশি, তাই মেহেরপুর সদর ও মুজিবনগর উপজেলার কলা চাষিদের ভাগ্য বদলে সুদিন এসেছে। মাটি ও আবহাওয়া কলা চাষের উপযুক্ত তাই দিন দিন মেহেরপুরে কলার আবাদও বাড়ছে। মেহেরপুরের এই কলা চাষ, ব্যবসা ও পরিবহনের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।
জেলার মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী, দারিয়াপুর, গৌরিনগর, পুরন্দরপুর, গোপালনগর, বাগোয়ান, আনন্দবাস, মহাজনপুর, গোপালপুর, কোমরপুর ও যতারপুর এবং মেহেরপুর সদর উপজেলার বন্দর, আমদহ, চকশ্যামনগর, আশরাফপুর, নূরপুর, পিরোজপুর, টুঙ্গী, কাঁঠালপোতা, সোনাপুর, বলিয়ারপুর, গহরপুর, কলাইডাঙ্গা, যুগিন্দা, রাজনগর, আমঝুপি ও চাঁদবিল গ্রামের মাঠে প্রচুর কলার চাষ হয়েছে। অন্যদিকে গাংনী উপজেলার কিছু কিছু মাঠেও কলা চাষ শুরু হয়েছে।
জেলা কৃষি বিভাগের হিসেব মতে, গেলো মৌসুমে জেলায় কলা চাষ হয়েছে এক হাজার ৩০৫ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে ১ হাজার ৫’শ হেক্টর ছাড়িয়ে গেছে। আগামী মৌসুমে ২ হাজার হেক্টর ছাড়িয়ে যাবে বলে জেলা কৃষি বিভাগের ধারণা।
মুজিবনগর উপজেলার দারিয়াপুর গ্রামের চাষি আতাউর রহমান জানান, প্রথম দিকে গ্রামের মাঠের এক বিঘা জমিতে কলা চাষ করেছিলেন। ভালো লাভ হওয়ায় পরে আবারো দুই বিঘা জমিতে শুরু করেন। এরপর থেকে কলার আবাদ প্রতি বছরই করছেন।
মেহেরপুর সদর উপজেলার পিরোজপুর গ্রামের সুুমন হোসেন জানান, কলা চাষে কম পরিশ্রমে ও কম খরচেই অধিক লাভ হওয়া এবং জমি থেকে ব্যবসায়ীরা কিনে নেওয়ায় দিন দিন কলা চাষে ঝুঁকছেন আমাদের এলাকার চাষিরা। তাছাড়া জেলা থেকে প্রতিদিন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় মেহেরপুরের এ কলার চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে জেলা থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে ৪০ থেকে ৫০ ট্রাক ও আলমসাধুসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে কলা দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এসএম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, কলা চাষে সব ধরনের সহযোগিতার পাশাপাশি একই জমিতে দুই অথবা তিন বছরের বেশি কলার চাষ না করতে চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছি। দুই বছর কলার চাষ ও পরের বছরে আবার অন্য যে কোনো সবজি আবাদের পর আবারো কলা চাষ করলে জমির ক্ষতি হবে না।