জার্মানির কোলন শহরে বসেছে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ খাদ্যপণ্য ও পানীয়র প্রদর্শনী ‘আনুগা ২০১৭’। কোলনমেসে প্রদর্শনকেন্দ্রে বিশ্বের ১০৭টি দেশের সাত হাজার ৪০০ কম্পানি তাদের পণ্য, সেবা নিয়ে অংশ নিচ্ছে। ৩৪তম এই আসরে ১১টি বৃহৎ হলজুড়ে চলছে এই প্রদর্শনী। গতকাল সকালে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়। পাঁচ দিনের এই প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ থেকে প্রাণ ও সজীব গ্রুপ অংশ নিচ্ছে। মেলায় প্রাণ এক্সপোর্ট দুটি স্টলে তাদের খাদ্যপণ্য ও পানীয় প্রদর্শন করছে।
আনুগা আন্তর্জাতিক খাদ্যশিল্পের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ প্রদর্শনী। বৃহৎ আয়োজনে এক ছাদের নিচে ১০টি ট্রেড শোর এবারের কান্ট্রি পার্টনার ভারত। মেলায় সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ভারতের শতাধিক কম্পানি অংশ নিচ্ছে। পাঁচ দিনের আনুগা আয়োজন শেষ হবে বুধবার।
প্রাণ এক্সপোর্ট লিমিটেডের উপমহাব্যবস্থাপক এবং ইউরোপ ও আমেরিকা অঞ্চলের রপ্তানি প্রধান গোলাম রসুল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আনুগা প্রদর্শনীতে প্রাণ ১৪ বারের মতো অংশ নিচ্ছে।
এবারের প্রদর্শনীতে ১০টি ক্যাটাগরির প্রায় সাড়ে ৫০০ পণ্য আনা হয়েছে। গত বছরের আনুগা প্রদর্শনীতে আমরা একটি স্টলে অংশ নিয়েছিলাম, এবার দুটি স্টল নিয়েছি। গত বছর আমরা ৩.৫ মিলিয়ন ডলারের বিক্রয় আদেশ পেয়েছিলাম। এবার ছয় মিলিয়ন ডলারের বিক্রয়াদেশ পাব বলে আশা করছি। ’
গোলাম রসুল আরো বলেন, এবারের মেলায় প্রথম দিনেই আমাদের সঙ্গে লেবানন, কোরিয়া, যুক্তরাজ্য ও বেলজিয়ামের বেশ কয়েকটি কম্পানি কনফেকশনারি পণ্য ক্রয়ের আদেশ দিয়েছে। এ ছাড়া বেশ কিছু বিদেশি ক্রেতা আমাদের পণ্যের নমুনা সংগ্রহ করছে। আশা করছি তাদের কাছ থেকেও মেলার শেষের দিকে ভালো অর্ডার পাব। ’
মেলায় অংশ নিতে আফ্রিকার সোমালিল্যান্ড থেকে এসেছিলেন হাদ্রয় ট্রেডিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ওমর আব্দী। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পুরো আফ্রিকাতেই প্রাণ এখন বেশ পরিচিত নাম। আমার দেশে প্রাণের জুসের চাহিদা বেশি। এখন আমরা কনফেকশনারিসহ অন্যান্য পণ্য নিচ্ছি। গত বছরের চেয়ে এবার আরো ৪০ শতাংশ বেশি পণ্য প্রাণের কাছ থেকে আমদানি করব। ’
মেলায় উদ্বোধনীতে অংশ নিতে আসা প্রাণ এক্সপোর্ট লিমিটেডের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) মিজানুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা অভ্যন্তরীণ বাজারের চাহিদা মিটিয়ে বিশ্ববাজারেও ব্যাপক মনোযোগ দিয়েছি। প্রথমে ভারতের বাজার দিয়ে শুরু করেছিলাম। এরপর এশিয়ার অন্যান্য বাজার, মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, আমেরিকাসহ ১৩৪টি দেশে পণ্য রপ্তানি করছি। আশা করছি, পর্যায়ক্রমে আমরা বিশ্বের বেশির ভাগ দেশেই প্রাণের পণ্য পৌঁছে দিতে পারব। ’
হল্যান্ডভিত্তিক বৈশ্বিক খাদ্যপণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনিডেক্সের সেলস ডিরেক্টর ফোরকান আলী কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা আফ্রিকা, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ভারত, চীন, পাকিস্তানসহ আরো কয়েকটি দেশ থেকে খাদ্যপণ্য আমদানি করি। অনাবাসি বাংলাদেশি হিসেবে নিজের দেশ থেকে পণ্য নিতে পারলে আমার ভালো লাগবে। তা ছাড়া বাংলাদেশ সাশ্রয়ী মূল্যে ভালো মানের পণ্য সরবরাহে সুনাম কুড়াচ্ছে। আমরা প্রাণের সব ক্যাটাগরির পণ্য নিতে চাই। আমি মনে করি, ইউরোপের বাজারে প্রাণের বিপুল সম্ভাবনা আছে। আন্তর্জাতিক বাজারেও প্রাণ জায়গা করে নিয়েছে। ’