বরিশালের সুপারির কদর বিদেশেও

সুপারির বাম্পার ফলনে বরিশাল অঞ্চলের কৃষকের মুখে এবার হাসি ফুটেছে। বিভাগের ছয় জেলায় এ বছর ৮৯ হাজার ১২৫ মেট্রিক টন সুপারি উৎপাদন হয়েছে। এসব সুপারি দক্ষিণাঞ্চলসহ সারা দেশে পাঠানো হচ্ছে। সুপারি কেনাবেচায় জমজমাট হয়ে উঠেছে এ অঞ্চলের হাটগুলো। প্রতিদিন কেনাবেচা হচ্ছে লাখ লাখ টাকার সুপারি। শুধু তাই নয়, দেশ পেরিয়ে বিদেশও কদর বাড়ছে এখানকার সুপারির। ভারত, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইনসহ বিভিন্ন দেশে রফতানি হচ্ছে বরিশালের সুপারি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, বিভাগের ছয় জেলায় সুপারি আবাদ হয়েছে ১৭ হাজার ৮০৯ হেক্টর জমিতে। আর সুপারি উৎপাদন হয়েছে ৮৯ হাজার ১২৫ মেট্রিক টন। এর মধ্যে বরিশালে ২ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে সুপারি উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৪ হাজার ২০ মেট্রিক টন, পিরোজপুরে ৪ হাজার ৫৬৭ হেক্টর জমিতে প্রায় ৭ হাজার ৪৭০ মেট্রিক টন, ঝালকাঠিতে ১ হাজার ৫৬২ হেক্টর জমিতে প্রায় ৫ হাজার ৪৬৭ মেট্রিক টন, পটুয়াখালীতে ৭০৫ হেক্টর জমিতে প্রায় ২ হাজার ৮১৮ মেট্রিক টন, বরগুনায় ১ হাজার ১৮৫ হেক্টর জমিতে প্রায় ৭১০ মেট্রিক টন এবং ভোলায় ৭ হাজার ৭৮০ হেক্টর জমিতে সুপারি উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৬২ হাজার ২৪০ মেট্রিক টন।
বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া এলাকার বাজারে বৃহস্পতিবার কথা হয় সুপারি বিক্রেতা আবদুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান, তার বাগানে এবার সুপারির ফলন ভালো হয়েছে। স্থানীয় দর হিসাবে প্রতি কুড়ি (২১০টি সুপারিতে ১ কুড়ি) সুপারি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে এর চেয়েও বেশি দাম আশা করেন তিনি। জেলার মেহেদিগঞ্জ উপজেলায়ও এবার সুপারির বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলার চর এককরিয়া গ্রামের সুপারি চাষি জালাল মিয়া জানান, এক সময় মেহেন্দিগঞ্জ ছিল সুপারির জন্য বিখ্যাত। কিন্তু নদীভাঙনের কারণে অনেক গ্রামের সুপারি বাগান বিলীন হয়ে গেছে। তবে তার ৫ হেক্টর জমিতে এ বছর বেশ ভালো সুপারির ফলন হয়েছে।
পিরোজপুরের কাউখালীতে সুপারির বৃহৎ হাট বসে প্রতি বছর। এবারও জমজমাট হয়ে উঠছে কাউখালী শহরসহ তালুকদারহাট, মিয়ারহাট, নতুনবাজারসহ বিভিন্ন সুপারির হাট। কাউখালী উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, এ বছর প্রায় ৩০০ একর জমিতে সুপারির আবাদ হয়েছে। তালুকদারহাটের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সিদ্দিক হোসেন জানান, তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে সুপারি সংগ্রহ করে হাটে বিক্রি করেন। বর্তমানে কাউখালীর সুপারির হাটগুলোও ক্রেতা-বিক্রেতার আনাগোনায় মুখরিত হয়ে উঠেছে।