কচুমুখী যেন ‘সাদা সোনা’

নামেমাত্র শ্রমে ও উৎপাদন খরচ কমে, ফলন বেশি হওয়ায় শেরপুরের নকলা উপজেলার উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমিতে বেলে বা বেলে-দোআঁশ মাটিতে কচুমুখী চাষ করে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। খরচের তুলনায় দ্বিগুণ লাভ পাওয়ায় এ জাতের ‘সাদা সোনা’ নামে পরিচিত এ সবজি চাষে কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। তাতে নকলা উপজেলায় কচুর আবাদ দ্বিগুণ হারে বাড়ছে।

বিভিন্ন জাতের কচুমুখীর মধ্যে সাধারণত মৌখিক, লতিরাজ, মান ও জাতি কচু বেশি চাষ করা হলেও নকলায় মুখী কচুর প্রভাব লক্ষ্য করার মতো। প্রায় তিনগুণ লাভের মুখী কচুর চাষ গেল বছরের তুলনায় চলতি বছর প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। গেল বছর চাষ হয়েছিল মাত্র ৭০ হেক্টর জমিতে, আর এ বছর তা বেড়ে প্রায় দেড়শ’ হেক্টরে উন্নীত হয়েছে বলে কৃষি অফিস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

উপজেলার বানেশ্বরদী, টালকী, পাঠাকাটা, চন্দ্রকোনা, চরঅষ্টধর, নকলা ও গনপদ্দি ইউনিয়নসহ পৌরসভার ধুকুড়িয়া, লাভা, গড়েরগাঁও এলাকার জমি অপেক্ষাকৃত উঁচু এবং মাটি দোআঁশ ও বেলে-দোআঁশ থাকায় ওইসব এলাকায় কচুমুখী বেশি চাষ করা হয়। বানেশ্বরদী ইউনিয়নের ভূরদী এলাকার ছাইয়েদুল হক, মকুল, আমীর আলী, ইব্রাহীম, ছমেদ আলী, ছাইফুল, জবেদ আলী; পাঠাকাটার ইয়াকুব আলী, ফয়েজ উদ্দিন; চন্দ্রকোণার মোকসেদ আলী, মোক্তার আলী, জাফর আলী; নকলা এলাকার মোশারফ, কব্দুল, লিটন মিয়া; ধুকুড়িয়ার হাফেজ উদ্দিন, হাসেম, নজরুল, ইসলাম, মধ্য লাভার শহিদুল ও পূর্ব লাভার শাহাদৎ ও আক্তারসহ অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ধানসহ অন্য যেকোনো ফসল চাষে উৎপাদন খরচের তুলনায় ব্যয় অনেক বেশি হওয়ায় লাভ কম থাকে। কিন্তু মুখী কচুতে খরচের তুলনায় লাভ কয়েকগুণ বেশি হয়।

তাই তারা দিন দিন কচু চাষের পরিমাণ বাড়াচ্ছেন। তাদের দেখাদেখি অন্য এলাকার কৃষকরা কচুমুখী চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। শাহাদৎ জানান, প্রতি বিঘাতে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ করে ৫৫ থেকে ৬৫ মণ মুখী পাওয়া যায়। যার বাজার মূল্য ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। এতে বিঘাপ্রতি ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা লাভ থাকে। সে হিসাবে দুই-তিন বিঘা জমিতে কচুমুখী চাষ করে চার মাসেই লাখপতি হওয়া সম্ভব।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবদুল ওয়াদুদ জানান, সাধারণত চৈত্র ও বৈশাখ মাসে মুখীর বীজ লাগাতে হয়। প্রতি বিঘাতে ৮০ থেকে ১০০ কেজি বীজ লাগে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর বলেন, উঁচু ও মাঝারি উঁচু জমিতে বেলে, বেলে-দোআঁশ মাটিতে বিশেষ করে পতিত জমিতে কচুমুখী চাষ করে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। আর তাই তো কেউ কেউ কচুমুখীকে সাদা সোনা হিসেবে আখ্যায়িত করছেন। তিনি আরও বলেন, কচুমুখীর আবাদ বৃদ্ধি করতে কৃষি অফিস থেকে নিয়মিত পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

সংশোধনী : ২৭ আগস্ট ‘সুসংবাদ প্রতিদিন’ প্রতিবেদনে ‘দেশি মুরগি পালনে অভাব বিদায়’ প্রতিবেদনটি প্রকাশের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট সাভার, ঢাকার অতিরিক্ত পরিচালক (সাঃ সাঃ) (অঃ দাঃ) ড. মোঃ এরসাদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক পত্রে একটি সংশোধনী দিয়েছেন। যেখানে বলা হয়েছে, প্রতিবেদনের দ্বিতীয় কলামে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের ‘দেশি মুরগি সংরক্ষণ ও উন্নয়ন সহযোগিতায় এর স্থলে ‘বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের দেশি মুরগি সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের সহযোগিতায় হবে।’