২০২২ সাল নাগাদ মাছ চাষে বাংলাদেশ শীর্ষে থাকবে

মত্স্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হক বলেছেন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) পূর্বাভাস দিয়েছে যে, ২০২২ সাল নাগাদ বিশ্বের যে চারটি দেশ মাছ চাষে বিপুল সাফল্য অর্জন করবে তার মধ্যে প্রথম দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ। ২০২২ সাল নাগাদ বাংলাদেশ মাছ চাষে বিপুল সাফল্য অর্জন করবে। গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

জাসদ দলীয় সংসদ সদস্য বেগম লুত্ফা তাহেরের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী সংসদকে জানান, বাংলাদেশের কৃষি নির্ভর অর্থনীতিতে মত্স্যখাতের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের খাদ্যে প্রাপ্ত প্রাণিজ আমিষের প্রায় ৬০ শতাংশ যোগান দেয় মাছ। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মাছ উত্পাদনে বাংলাদেশ চতুর্থ স্থান অধিকার করেছে।

মন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে তার পক্ষে সংসদে উত্তর দেন প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। তিনি জানান, বিপন্নপ্রায় মত্স্য প্রজাতির সংরক্ষণ, অবাধ প্রজনন ও বংশবৃদ্ধির মাধ্যমে মাছের উত্পাদন বৃদ্ধি এবং জলজ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে মত্স্য অভয়াশ্রম একটি কার্যকর ব্যবস্থাপনা কৌশল। বিগত পাঁচ বছরে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন নদ-নদী ও অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে ৫৩৪টি মত্স্য অভয়াশ্রম স্থাপন করা হয়েছে।

মন্ত্রী জানান, অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠার ফলে বিলুপ্তপ্রায় এবং বিপন্ন ও দুর্লভ প্রজাতির মাছ যথা- একঠোঁট, টেরিপুঁটি, মেনি, রাণী, গোড়া গুতুম, চিতল, ফলি, বামোস, কালিবাউস, আইড়, টেংরা, সরপুঁটি, মধু পাবদা, রিটা, কাজলী, চাকা, গজার, বাইম ইত্যাদির তাত্পর্যপূর্ণ পুনরাবির্ভাব ও প্রাপ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে। অভয়াশ্রমে দেশী কৈ, শিং, মাগুর, পাবদা ইত্যাদি মাছের পোনা ছাড়ার ফলে এসব মাছের প্রাচুর্যও বৃদ্ধি পেয়েছে। আর মিঠা পানির মাছ উত্পাদনে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ৪র্থ।

সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য নুরজাহান বেগমের প্রশ্নে মন্ত্রী ছায়েদুল হক জানান, দেশে মোট উত্পাদিত মাছের মধ্যে ইলিশের অবস্থান শতকরা ১১ ভাগ। ইলিশের উত্পাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের মাছের মোট উত্পাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে চাঁদপুর জেলায় মত্স্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। উক্ত প্রকল্পের মোট বাজেট বরাদ্দ ৩৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। সরকারের নানাবিধ পদক্ষেপের ফলে বাজারে দেশীয় বিলুপ্তপ্রায় মাছের প্রাপ্যতা সাম্প্রতিককালে বৃদ্ধি পেয়েছে।