বাগেরহাটের বেতাগা যেন এক টুকরো সোনার বাংলা সবুজ বনে ঘেরা এ যেন বাংলার এক অপরুপ সৌন্দর্য। এ যেন এক টুকরো সোনার বাংলা। বর্তমান সরকারের টেকসই উন্নয়ন ও লক্ষ্যমাত্র অর্জনে বনায়নও যে একটি অগ্রনী ভূমিকা পালন করছে। তার জল যান্তো স্বাক্ষী হিসাবে দন্ডায়মান রয়েছে ৬৫কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বেতাগার বঙ্গবন্ধুসহ বিভিন্ন বনায়ন। এ যেন সবুজ পল্লী। সবুজ সমারোহে যেন মনকে মনমুগ্ধ করে তুলছে সমগ্র এলাকার এই বনায়ন। পরিবেশকে সুরক্ষা করার পাশাপাশি সাড়ে ৩শত উপকারভোগীকে করে তুলেছে স্ববলম্বী। আজ তারা পিছিয়ে পড়া কোন জনগোষ্টির সাথে জড়িত নেই। তারা এখন আরো কর্মক্ষম। তারা এখন আরো স্বাবলম্বী। তাই সত্যিকার অর্থে বলতে হয়, বেতাগা এ যেন এক টুকরো সোনার বাংলা।
বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার ১নং বেতাগা একটি ইউনিয়নের নাম। এটি যেন সত্যিই ১নম্বরে রয়েছে। এ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান স্বপন দাশ ১৯৯৮/৯৯সালে শিক্ষা স্বাস্থ্য স্যেনিটেশনে শতভাগ কভারের পাশাপাশি তিনি পরিবেশের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করার জন্য একটি পরিকল্পনা গ্রহন করেন। তাই তিনি তার নিজস্ব চিন্তা-ভাবনায় তার নিজস্ব অর্থায়নে প্রথমে তার ইউনিয়নের সকল প্রবেশ পথে রাস্তার দুই পার্শ্বে বিপুল পরিমানে বৃক্ষাদি রোপন করার কাজ শুরু করেন। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম শুরু হলেই রাস্তার দুই পার্শ্বে বৃক্ষরোপন করাই ছিল তার মুল লক্ষ্য। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য তিনি প্রায় ৬৫হাজার ফলজ বনজ ও ওষদি বৃক্ষ রোপন করতে থাকেন। সেই শুরু হতে এখন প্রায় মরে ছেড়ে প্রায় ৪০হাজার বৃক্ষ রাস্তার দু”পার্শ্বে কালের স্বাক্ষী হিসাবে ডন্ডায়মান রয়েছে। যা এই ইউনিয়নের সুযোগ্য চেয়ারম্যান-ই করতে সক্ষম হয়েছেন। আর গাছগুলি পরিচর্যা করার জন্য তিনি স্ব-স্ব এলাকার ৩৫০জন উপকার ভোগীদের নিয়ে ১১টি সমিতি তৈরী করে দিয়েছেন। সেই সমিতিতে এখন ৩৫০জন উপকারভোগী, যাদের কাছে সকল বৃক্ষের সুবিধা ও অসুবিধার দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। এরাই এখন তাদের রোপনকৃত বৃক্ষাদি পরিচর্যা ও দেখাশুনার কাজ করছে। এই ১১টি সমিতির রোপনকৃত ৬৫কিলোমিটার বনায়নে বিপুল সংখ্যক বৃক্ষাদি রোপন করে সারাদেশের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে।
শুধু তাই নয়, তারা সারাদেশে সুনাম অর্জন করতেও সক্ষম হয়েছে। এখানে অর্জুন অশোক কৃষ্ণচুড়া শিরিস বাবলা কড়াই আম জাম কাঠালসহ বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষ রোপন করা হয়েছে।
স্থানীরা বলেছেন, চুলকাঠি গৌরম্ভা শুকদাড়া বা শ্যামবাগাত যে স্থান দিয়েই আপনী বেতাগায় প্রবেশ করবেন, সে দিকেই রাস্তার দুপাশ দিয়ে বিপুল পরিমানে সারিবদ্ধ বৃক্ষের সমাহার দেখবেন। বৃক্ষ রোপন করার ফলে তারা এখন আগের তুলনায় আরো অনেক স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। কারণ এ ৪০হাজার গাছের বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় দুই থেকে আড়াই কোটি টাকার উপরে। তাদের রোপনকৃত বৃক্ষ দেখার জন্য জাতিসংঘের একটি প্রতিনিধি দল বেতাগায় এসেছিলেন। যার নের্তৃত্ব ছিলেন মোজাম্বিকের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও ভারতে সাবেক প্রেসিডেন্ডের স্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের ২৫জনের একটি প্রতিনিধি দল।
এ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান স্বপন দাশ শুধু বনায়নই গড়ে তোলেননি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্যনিটেশন ও পরিবেশের উন্নয়নসহ শিক্ষা ও মানব সম্পদ উন্নয়নে ব্যাপক কর্মপরিকল্পনা গ্রহন ও তা বাস্তবায়ন করে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ হিসাবে খেতাব অর্জন করেছেন। যে কারনে তিনি ৫ম বার এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে ১১বার জেলার শ্রেষ্ট এবং ২বার সারাদেশের সেরা চেয়ারম্যান হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন।