কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে সাফল্যে দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে বাংলাদেশ

পরিবহন, শিল্প ও বিদ্যুৎ খাতে কার্বন নিঃসরণ কমাতে দুই বছর আগে জাতিসংঘের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে দক্ষিণ এশিয়ার ছয়টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে। তবে সুশাসনে ঘাটতি থাকায় তহবিলে অর্থ আসছে না। এমন তথ্য উঠে এসেছে জার্মানভিত্তিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ বা টিআইবির এক গবেষণা প্রতিবেদনে। সংস্থাটি বলেছে, কার্বন নিঃসরণ কমাতে বাংলাদেশের নেওয়া ১১টি কৌশলের মধ্যে ৯টি বাস্তবায়ন সঠিক পথেই রয়েছে। ১০০ স্কোরের মধ্যে বাংলাদেশ পেয়েছে ৭০। পাশের দেশ ভারত স্কোর করেছে মাত্র ৩০। দক্ষিণ এশিয়ার অন্য চারটি দেশের স্কোরও ৫০ থেকে ৬০ এর মধ্যে। দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশগুলো হলো ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও মালদ্বীপ। টিআইবি বলেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সরকারের উদ্যোগ প্রশংসনীয় হলেও প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসনের ঘাটতি রয়েছে। আর এ কারণেই জলবায়ু তহবিল থেকে কাঙ্ক্ষিত হারে অর্থ পাচ্ছে না বাংলাদেশ। গবেষণা প্রতিবেদনে দেখানো হয়, ভারতে সুপারক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহারে সরকারি পরিকল্পনা সম্পর্কে খুব কম মানুষেরই ধারণা আছে। এ প্রসঙ্গে টিআইবি প্রশ্ন তুলেছে, যেখানে ভারতের মানুষের কাছেই সুপারক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি এখনো অজানা, সেখানে ভারত কীভাবে বাংলাদেশে এসে সুন্দরবনের পাশে রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছে!

গতকাল রাজধানীর ধানমন্ডিতে মাইডাস সেন্টারে টিআইবির কার্যালয়ে ‘জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনে স্বপ্রণোদিত অঙ্গীকার ও প্রতিপালন : দক্ষিণ এশীয় অভিজ্ঞতাভিত্তিক পদ্ধতিগত পর্যবেক্ষণ’ শিরোনামে গবেষণা প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হয়। গবেষণা প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন এশিয়ান সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্টের (এসিডি) পরিচালক ড. এ কে এনামুল হক। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, উপনির্বাহী পরিচালক ড. সুমাইয়া খায়ের, টিআইবির জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসন সেলের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার জাকির হোসেন খানসহ অন্যরা।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো কার্বন নিঃসরণ কমানো সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি পালনে কতটা সচেষ্ট, প্রতিশ্রুতিগুলো সঠিক কিনা এবং সরকারগুলোর এ বিষয়ক কার্যক্রমকে জনগণ কীভাবে মূল্যায়ন করছে তা জানার উদ্দেশেই গবেষণাটি পরিচালিত হয়। গবেষণার জন্য ছয়টি দেশে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের ১৭ নভেম্বর থেকে আর তথ্য সংগ্রহের কাজ শেষ হয় গত বছরের ৩০ এপ্রিল। ছয়টি দেশের ১৪০ জনের কাছ থেকে প্রাপ্ত মতামতের ওপর ভিত্তি করে গবেষণা প্রতিবেদনটি তৈরি করে টিআইবি।