রপ্তানিতে বড় সম্ভাবনা দেখাচ্ছে রাশিয়া

বড় বাজারগুলোতে যখন বাংলাদেশের রপ্তানি হোঁচট খাচ্ছে তখন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে নতুন বাজার রাশিয়া। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাজারটিতে বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪৭.৮৩ শতাংশ। রপ্তানি হয়েছে ৪৬ কোটি ডলারের পণ্যে। কয়েক বছর আগেও রাশিয়ায় মোট রপ্তানি আয় ছিল মাত্র দেড় থেকে ২ কোটি ডলার। এখন তা ক্রমেই বৃহৎ হচ্ছে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য জানা গেছে, সদ্য সমাপ্ত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ওই দেশে ৪৬ কোটি ৪৬ লাখ ২০ হাজার ডলার বা ৩ হাজার ৭৬০ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা ২০১৫-১৬ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৭.৮৩ শতাংশ বেশি। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রাশিয়ায় মোট ৩১ কোটি ৪২ লাখ ৯০ হাজার ডলারের পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ। বিদায়ী অর্থবছরে রাশিয়ার বাজারে পণ্য রপ্তানিতে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে তৈরি পোশাক খাতে। এ খাত থেকে আয় হয় ৩৭ কোটি ৯৪ লাখ ১০ হাজার ডলার। অথচ আগের অর্থবছরে (২০১৫-১৬) আয় হয় ২৮ কোটি ৯১ লাখ ৬০ হাজার ডলার। অর্থাৎ আগের বছরের চেয়ে বিদায়ী অর্থবছরে রাশিয়ায় পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধি পায় ১৩ কোটি ২ লাখ ৫০ হাজার ডলারের। আর প্রবৃদ্ধি হয় ৫২.২৭ শতাংশ।

রাশিয়ার বাজারে পোশাক রপ্তানির উচ্চ প্রবৃদ্ধিকে খুবই ইতিবাচকভাবে দেখছেন পোশাক রপ্তানিকারকরা। এ বিষয়ে বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ও এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ইএবি) সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, রাশিয়ার বাজার পোশাকশিল্পের জন্য অপ্রচলিত বা নতুন বাজার হিসেবে পরিচিত। এই বাজার নিয়ে সরকার ও আমরা রপ্তানিকারকরা অনেক কাজ করেছি। সে দেশের বাজারে আমাদের পণ্য পরিচিতির জন্য অনেক কর্মসূচি নেওয়া হয়। তার ফল আমরা এখন পাচ্ছি। পোশাকের অন্য নতুন বাজারে যেখানে প্রবৃদ্ধি খুবই নেতিবাচক সেখানে রাশিয়ায় উচ্চ প্রবৃদ্ধি ঘটছে। এতেই প্রমাণিত হয় আগামীতে রাশিয়া হতে যাচ্ছে আমাদের পোশাকশিল্পের অন্যতম বড় বাজার। তবে বাজারটি ধরে রাখার দায়িত্ব আমাদের। কোনো কারণে যেন বাজারটি নষ্ট না হয় সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।

এদিকে সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে চীনেও রপ্তানি আয় বেড়েছে। দেশটিতে পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশের মোট আয় হয়েছে ৯৪ কোটি ৯৪ লাখ মার্কিন ডলার, যা এর আগের ২০১৫-১৬ অর্থবছরের আয়ের তুলনায় ১৭.৪৮ শতাংশ বেশি। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে চীনে পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছিল ৮০ কোটি ৮১ লাখ ডলার।

ইপিবির হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সব ধরনের পণ্য রপ্তানিতে বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছিল মোট ৩ হাজার ৪২৫ কোটি ৭১ লাখ ৮০ হাজার ডলার। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩ হাজার ৭০০ কোটি ডলার।

সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে সার্বিক রপ্তানিতে বাংলাদেশের আয় হয়েছে ৩ হাজার ৪৮৩ কোটি ৫০ লাখ ৯০ হাজার ডলার বা প্রায় ২ লাখ ৮২ হাজার ৯৭০ কোটি টাকা, যা এর আগের ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের তুলনায় ১.৬৯ শতাংশ বেশি।