উপজেলার ডাকাতিয়া ইউনিয়নে আঙ্গারগাড়া ও চাঁনপুর গ্রাম দুইটি স্থানীয়দের কাছে পোল্ট্রি গ্রাম হিসাবে পরিচিত। বর্তমানে ওই দুইটি গ্রামে পোল্ট্রির সংখ্যা প্রায় দুই হাজার। ভোর হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত ওইসব খামারে মুরগির কিচির-মিচির শব্দে মুখরিত গ্রামবাসী। যথাযথ প্রশিক্ষণের অভাবে ওই দু’টি গ্রামের খামারিদের দিনের পর দিন লোকসান গুনতে হচ্ছে। যত্রতত্র খামারের বিষ্ঠা বা লিটার ফেলে রাখায় দুর্গন্ধে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি রোগ-বালাইয়ের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। মশা-মাছির উপদ্রব বৃদ্ধি পাওয়ায় শিশু ও বয়োবৃদ্ধরা নানা অসুখে ভুগছে। তবে সরকারিভাবে খামারিদের সঠিক প্রশিক্ষণ ও নীতিমালা প্রণয়ন করলে পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি ওই শিল্পের লোকসান হার কমানো সম্ভব বলে সংশ্লিষ্টদের দাবি। আমাদের দেশে প্রাণিজ আমিষের অভাব খুবই প্রকট। আমিষের অভাব মেটাতে গ্রামাঞ্চলের প্রত্যেক বাড়িতে মুরগি পালনের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে অল্প সময়ে কম পুঁজি বিনিয়োগের মাধ্যমে মুরগি পালন একটি লাভজনক ও সম্ভাবনাময় শিল্প হিসাবে পরিচিতি পেয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ডাকাতিয়া ইউনিয়নের আঙ্গারগাড়া ও চাঁনপুর গ্রামে বাড়ির আঙিনায় ছোট-বড় খামার করে শত শত যুবক আজ সাবলম্বী। পাশাপাশি খামারগুলোতে কাজ করা কয়েক হাজার শ্রমিক তাদের পরিবার নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে দিনাতিপাত করছে। চাঁনপুর গ্রামের সৌদি ফেরত আসমত আলী জানান, আমি বিদেশ থেকে কিছু টাকা নিয়ে দেশে আসি। কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। তারপর অনেক চিন্তা-ভাবনা করে প্রথমে ৫০০ মুরগির একটি খামার করি। বর্তমানে আমার ওই খামারে মুরগির সংখ্যা পাঁচ হাজার। আমার খামারে বর্তমানে ১০ জন শ্রমিক কাজ করে সংসার চালাচ্ছে। একই গ্রামের অপর খামারি আলম মিয়া জানান, আমি অনার্স পাস করার পর চাকরির জন্য অনেক ঘোরাঘুরি করেছি। কিন্তু চাকরি না পেয়ে অবশেষে বাবার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে একটি মুরগির খামার করি। তারপর আর আমাকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. হেলালউদ্দিন জানান, আমরা খামারিদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে যাচ্ছি। গতমাসেও কেজিএফ ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে ডাকাতিয়া ইউনিয়নের দুইটি প্রোগ্রামের মাধ্যমে ১৫০ জন খামারিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। যা পরিমাণের চেয়ে অনেক কম।