শতবর্ষ পেরিয়ে সরিষাবাড়ীর পিংনা উচ্চ বিদ্যালয়

সরিষাবাড়ী উপজেলায় মহাকবি কায়কোবাদের স্মৃতি বিজড়িত যমুনা নদীর পূর্ব তীরে ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮৯৬ সালের জানুয়ারি মাসে পিংনা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। যে বিদ্যালয় থেকে শত শত শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ, কবি সাহিত্যিক, জ্ঞানী-গুণীরা বিদ্যা অর্জন করে রাষ্ট্রের মর্যাদাপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত আছেন। শতবর্ষ পেরিয়ে বিদ্যালয়টি আজও তার ঐতিহ্য অক্ষুণ্ন রেখেছে।

বিদ্যালয়টি ব্রিটিশ সরকারের আমলে স্থানীয় জনগণের মিলিত প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন এর অবস্থান ছিল বর্তমান পিংনা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনে। যার উত্তর পাশে ছিল বিরাট আদালত ভবন। ১৯০৭ সালে শশী মোহন চৌধুরী বিদ্যালয়টি বর্তমান অবস্থানে স্থানান্তর করেন। জমিদার শশী মোহনের পৃষ্ঠপোষকতা এবং প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক বাবু শ্রীশ চন্দ্র রায় বিএ এর অক্লান্ত পরিশ্রমে যমুনা নদীর পূর্ব তীরে পিংনা এলাকায় গড়ে উঠে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম স্বীকৃতি লাভ করে ধীরে ধীরে জ্ঞানের আলো ছড়ায়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলে প্রতিষ্ঠানটি।

এ বিদ্যালয়ে পড়েছেন স্বনামধন্য প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁ, জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের ও বার সমিতির সভাপতি এবং মুক্তিযুদ্ধের সফল সংগঠক মরহুম অ্যাডভোকেট মতিয়ার রহমান তালুকদার, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও কলামিষ্ট অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ, বিশিষ্ট সমাজ সেবক মরহুম আজগর আলী, সাবেক বিএনপি’র মহাসচিব ব্যারিস্টার মরহুম আব্দুছ সালাম তালুকদার, বাংলাদেশ পোস্ট অফিসের জিএম বদিউজ্জামান, সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মাওলানা নূরুল ইসলাম, সাবেক এডিশনাল সেক্রেটারি খন্দকার আতিয়ার রহমান, সাবেক যুগ্ম সচিব খালেকুজ্জামান, সদ্য অবসরপ্রাপ্ত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আজিজুল ক্কাহার মেহেদীসহ দেশ বরেণ্য শত শত জ্ঞানী-গুণী ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। বর্তমানে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক হাজারের অধিক। শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা ১৮ জন, তৃতীয় শ্রেণি একজন এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর সংখ্যা দু’জন।

১২৩ বছর ধরে সুনামের সঙ্গে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে সরিষাবাড়ী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পিংনা উচ্চ বিদ্যালয়। প্রায় ২০ বিঘা জমির উপর নির্মিত ‘ই’ টাইপ একটি বিশাল ভবন, তিন তলা বিশিষ্ট একটি একাডেমিক ভবনসহ মোট পাঁচটি পাকা ভবন, সুবিশাল প্রাচীর বেষ্ঠিত দুটি খেলার মাঠ, শান-বাঁধানো ঘাটসহ দুটি পুকুর, স্বয়ংসম্পূর্ণ আইসিটি ল্যাব, বিজ্ঞানাগার, ছাত্রাবাস, হলরুম, সমৃদ্ধশালী একটি পাঠাগার, আধুনিক মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ, অফিস কক্ষ, শিক্ষক কর্মচারীদের জন্য পাকা বাসস্থান ও একটি মসজিদ নিয়ে মনোরম পরিবেশে বিদ্যালয় ক্যাম্পাস সজ্জিত করা হয়েছে।

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মো. শামসুল আবেদীন মজনু বলেন, সর্বদিক দিয়ে বিবেচনা করে অতি প্রাচীন এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পিংনা উচ্চ বিদ্যালয়টি সরকারিকরণের জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।