টবেই ফলছে আনারস

নাম তার জলঢুপি। দেশি জাতের ছোট আকৃতির আনারস। খাবার উপযোগী হলে সবুজ থেকে গায়ের রঙ হলদে হয়। খেতে খুব সুস্বাদু। পাহাড়ি টিলায় বেড়ে ওঠা এ আনারস এবার ঘর বা বারান্দার ছোট টবেও ফলন দিচ্ছে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পাশে বাণিজ্য মেলার মাঠে চলছে ‘জাতীয় বৃক্ষমেলা-২০১৭’। গতকাল সোমবার মেলায় গিয়ে দেখা গেল, এ আনারস গাছ নিয়ে উপস্থিত দর্শনার্থীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ। এ ছাড়া ঘরের জানালা বা বারান্দার গ্রিলে বছরজুড়ে ফলন দেওয়া দেড় কেজি ওজনের থাই শসাকে ঘিরেও ছিল মানুষের ব্যাপক আগ্রহ।

মেলায় সবদিকে গাছ আর গাছ। বিচিত্র ধরনের মনোমুগ্ধকর ক্যাকটাস, হরেক রকমের ছায়াতরু, লতা, গুল্ম, ঔষধি ও সৌন্দর্য ছড়ানো নানা প্রজাতির গাছ। শত শত দুর্লভ বাহারি গাছের চারায় সাজানো স্টলগুলোয় সবুজের সমারোহ উপস্থিত দর্শনার্থীদের বিমোহিত করছে। গত রোববার মাসব্যাপী এ বৃক্ষমেলার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মেলায় এবার ফলদ ও ফুলের গাছ বেশি। ঝুমকোলতা, ক্যামেলিয়া, জেসমিন, জুঁই, চামেলি, কামিনী বেশ বিক্রি হচ্ছে। পিছিয়ে নেই ফল গাছ বিক্রিও। আম, আমলকী, লটকন, জামরুল, পেয়ারা, লেবু, মিসরীয় ডুমুর বিক্রি হচ্ছে বেশ।

বৃক্ষমেলায় ছোট ছোট গাছগুলোর শাখায় শোভা পাচ্ছে টসটসে রসাল আম, লেবু, জাম্বুুরা, আমড়া, লটকন, লাল করমচা, থোকায় থোকায় জামরুল, কামরাঙ্গা, পেয়ারাসহ বাহারি ফল। বৃক্ষপ্রেমীদের দৃষ্টি কেড়েছে ফলে ভরা এ ছোট্ট গাছগুলো।

প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলাপ্রাঙ্গণ উন্মুক্ত সবার জন্য। মেলায় সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ১০০টি স্টল পসরা সাজিয়ে বসেছে। এসব স্টলে প্রায় এক হাজার জাতের দেশি-বিদেশি ফলদ, বনজ, ঔষধি ও মুগ্ধতা ছড়ানো গাছ, বাগান পরিচর্যার সরঞ্জাম, জৈবসার, বীজ, কীটনাশক, ফুলের টব, গাছের ভিটামিন ইত্যাদি বিক্রি হচ্ছে।

মেলার তথ্যকেন্দ্রে

দায়িত্বরত সহকারী বন সংরক্ষক হুমায়ুন কবীর সমকালকে বলেন, মেলা সবে জমতে শুরু করেছে। মেলায় হারিয়ে যাওয়া ও দুলর্ভ অনেক গাছগাছালির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ রয়েছে।

মেলার মহুয়া নার্সারির স্টলে জলঢুপি আনারস ও দেড় কেজি ওজনের থাই শসার গাছ বিক্রি হচ্ছে। এ স্টলের স্বত্বাধিকারী বাবুল শেখ সমকালকে বলেন, জলঢুপি আনারস এখন ঘরেই টবের মধ্যে ফলন দেবে বছরজুড়ে। ওই স্টলে এ আনারসের চারা ৩শ’ থেকে ৮শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর থাই শসা বিক্রি হচ্ছে এক থেকে দুই হাজার টাকায়।

হোসেন নার্সারির সাদ্দাম হোসেন সমকালকে বলেন, তাদের স্টলে মুগ্ধতা ছড়ানো নলিনী নামে একটি মালয়েশিয়ান গাছ রয়েছে। গাছটির দাম তিন লাখ টাকা। এরই মধ্যে এর দাম উঠেছে এক লাখ ৮০ হাজার টাকা। এ গাছটি ২০০ বছর বাঁচে।

কৃষিবিদ উপকরণ নার্সারিতে রয়েছে দুর্লভ প্রজাতির আম গাছ। থাইল্যান্ডের দুর্লভ প্রজাতির সুন্দরী আম, মিসরীয় ডুমুর, মালয়েশিয়ার মিল্ক কোকোনাট বিক্রি হচ্ছে এ স্টলে। স্টলের ম্যানেজার খন্দকার শরিফুল আলম সমকালকে বলেন, ১০ টাকা থেকে শুরু করে ২০ হাজার টাকা মূল্যের গাছের চারা রয়েছে তাদের স্টলে। বারমাসী আম ১০০ থেকে আড়াই হাজার টাকা, মিসরীয় ডুমুর দুই হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমলকী গাছের দাম লাখ টাকার উপরে।