শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সফল নারী, সফল জননী, সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান এবং অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী জেলার মোরেলগঞ্জে চার জয়িতা নিজ নিজ মহিমায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রাখতে সক্ষম হয়েছেন। মনোয়ারা বেগম সফল নারী হিসেবে, সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানে রোকেয়া বেগম, শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নাহিদা আক্তার এবং অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জনকারী নারী হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন নাজমা আকতার। এই চার নারী ‘জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ’র আওতায় জয়িতা নির্বাচিত হয়েছেন।
মনোয়ারা বেগম সফল জননী হিসেবে জয়িতা নারী নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি মোরেলগঞ্জ পৌরসভার উত্তর সরালিয়া গ্রামের বাসিন্দা। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা। মাত্র দুই বছর বয়সে মাকে হারিয়ে সত্ মায়ের সংসারে যন্ত্রণা ভোগ করে এসএসসি পাস করেন। এসএসসি পাসের পর তার বিয়ে ও পিটিআইতে সফলতার সঙ্গে কৃতকার্য হন। তার চার মেয়ে। সবাই উচ্চশিক্ষিত।
রোকেয়া বেগম সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদানের একজন জয়িতা নারী। পৌরসভার ভাইজোড়া গ্রামের তোফাজ্জেল হোসেনের স্ত্রী। ১০ম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় তার বিয়ে হয়ে যায়। স্বামী সংসারের ঘাত-প্রতিঘাত ও নানা প্রতিকূলতার মাঝে সমাজের অসহায় মানুষ বিশেষ করে অসহায় নারীদের সহযোগিতায় এগিয়ে যান। আর এভাবেই সমাজ সেবায় অবদান রাখায় ইউপি সদস্য ও পৌর কমিশনার নির্বাচিত হয়েছেন।
নাহিদা আক্তার শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী জয়িতা নারীদের একজন। উপজেলার বারইখালী ইউনিয়নের উত্তর সুতালড়ী গ্রামের শফিকুল ইসলামের স্ত্রী। স্বামী বেকার। একমাত্র মেয়ে তন্বী অসুস্থ। টানা পোড়েনের সংসারে নিজের অদম্য ইচ্ছায় ২০১২ সালে বিএসএস পাস করতে সক্ষম হন। বর্তমানে তিনি ব্র্যাকের একটি প্রজেক্টে ইউনিয়ন সমন্বয়কারীর দায়িত্বে আছেন।
নাজমা আকতার অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী একজন জয়িতা নারী। মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের বাদুরতলা গ্রামের বাসিন্দা নাজমা অভাবের সংসারে বড় হন। পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে এসএসসি পাসের পর আর লেখাপড়া করতে পারেননি। জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে দর্জি প্রশিক্ষণ, নকশিকাঁথা সেলাই, অ্যাম্বোডারি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে মাত্র পাঁচশ টাকা পুঁজি নিয়ে শুরু করেন ব্যবসা। এরপর তিনি ধীরে ধীরে অর্থনৈতিকভাবে সফলতার মুখ দেখতে শুরু করেন।