বাঘায় চিনা বাদামের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

হাটে নেয়ার জন্য রাখা বাদাম -যাযাদিরাজশাহীর বাঘায় উঠতে শুরু হয়েছে আগাম জাতের চিনা বাদাম। বাদাম তুলে ঘর বোঝাইয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন উপজেলার চরাঞ্চলের বাদাম চাষিরা। চলতি মৌসুমে চিনা বাদামের বাম্পার ফলন পেয়েছেন কৃষকরা। ফলে বাদাম আবাদকারী কৃষকের মুখে ফুটেছে প্রশান্তির হাসি। এবার অন্যান্য বছরের তুলনায় যেমন আবাদ বেশি হয়েছে, তেমনি ফলনও হয়েছে ভালো। এ বছর ২৫ হেক্টরের বেশি জমিতে বাদামের চাষ হয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর।
সরেজমিন সোমবার সকালে পদ্মার চরাঞ্চলে গিয়ে দেখা যায়, কৃষক আসলাম হোসেন, মজিবর রহমান, শফিকুল ইসলাম, সালাউদ্দীন, শহিদুল ইসলাম, ফজলু মেম্বর, আব্দুল আওয়াল, ইদ্রিস, জালাল উদ্দীন, জহুরুল মালিথা ও বারেক মোল্লাসহ শতাধিক কৃষক চিনা বাদামের চাষ করেছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, বাঘা উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চলে চলতি বছর ২৫ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও এবার এর চেয়ে বেশি চাষ করা হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় এই এলাকায় চিনা জাতের বাদামের আবাদই বেশি করা হয়েছে। আবার অনেকে ত্রিদানা জাতের বাদামের আবাদ করেছেন। চরাঞ্চলের চকরাজাপুর চর, কালীদাসখালি চর, চর লক্ষ্মীনগর, পলাশী ফতেপুর, দিয়ার কাদিরপুর, চৌমাদিয়া ও আতারপাড়া চরাঞ্চল ঘুরে দেখা যায়, চরাঞ্চলের জমিতে এবার ব্যাপকভাবে বাদামের চাষ করা হয়েছে। বাদামের দাম ভালো থাকায় কৃষকদের ব্যাপক লাভ হওয়ার আশা করছেন। বাদাম পরিচর্যায় খরচ ও সময় দুটোই কম লাগে। স্বল্পব্যয়ে ও অল্প সময়ে ব্যপক লাভজনক এই বাদামের আবাদ। অধিকাংশ কৃষকই বাদাম তুলতে শুরু করেছেন।
বাদাম চাষি আসলাম আলী জানান, তিনি ১২ বিঘা জমিতে বাদামের চাষ করেছিলেন। এর মধ্যে ৫ বিঘা জমির বাদাম তোলা হয়েছে। এতে ৬৫ মণ বাদাম পেয়েছেন। তার আরও ৭ বিঘা জমিতে বাদাম রয়েছে, যা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সম্পূর্ণ তুলে ফেলবেন। তাতে সব মিলে ১৭০ মণ বাদাম পাবে বলে আশা করছেন। বর্তমান বাজার অনুযায়ী ৪ লক্ষাধিক টাকা বিক্রি করা যাবে। খরচ বাদ দিয়ে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা লাভ হবে বলে আশা করছেন তিনি।
পদ্মার চরাঞ্চলে গিয়ে জানা যায়, চকরাজাপুর এলাকার ইদ্রিস, জালাল ও বারেক মোল্লা তিনজন যৌথভাবে ৫০ বিঘা জমিতে বাদামের আবাদ করেছেন। ৫০ বিঘা আবাদে তাদের খরচ হয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এই জমি থেকে ৬শ মণ বাদাম পাওয়ার আশা করছেন তারা। বাজারদর ভালো থাকলে তাদের কাঁচা বাদাম বিক্রি হবে প্রায় ১৫ লাখ টাকা। এতে চলতি মৌসুমে সাড়ে ১২ লাখ টাকা লাভ হবে বলে আশা করছেন তারা।
বাঘা উপজেলা কৃষি অফিসার সাবিনা বেগম জানান, পদ্মার চরাঞ্চলে এবার ২৫ হেক্টরের বেশি জমিতে আগাম জাতের চিনা বাদামের চাষ হয়েছে। যার শতকরা ৩৫-৪০ ভাগ বাদাম কৃষক ঘরে তুলে ফেলেছেন। চলতি মৌসুমে স্থানীয় কৃষকরা উপজেলা কৃষি অফিসের দেয়া তথ্যানুযায়ী বাদামের বীজ বপন, পরিচর্যা ও কীটনাশক ব্যবহার করায় এবার বাদাম চাষে বাম্পার ফলন পেয়ে ব্যাপক লাভবান হবে বলে আশা করছেন তিনি।