গমের নতুন জাত উদ্ভাবন

কৃষকের জন্য আরেকটি সুসংবাদ বয়ে আনল গম গবেষণা কেন্দ্র। আলোকিত বাংলাদেশের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্লাস্ট রোগপ্রতিরোধী নতুন গমের জাত উদ্ভাবন করেছেন কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা। এতে আরও বলা হয়েছে, উদ্ভাবিত জাতটি একদিকে যেমন ব্লাস্ট ও মরিচা রোগ প্রতিরোধী, অন্যদিকে ৫০ থেকে ৬০ পিপিএম জিংক-সমৃদ্ধÑ যার উৎপাদনও অন্যান্য জাতের চেয়ে বেশি। হেক্টরপ্রতি এর উৎপাদন হবে ৪ থেকে ৫ টন। কার্যকর এ ভূমিকার জন্য গম গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন।
প্রসঙ্গত, গেল বছর যশোর অঞ্চলে গমে ব্লাস্ট দেখা দেয় এবং এ অঞ্চলের কৃষক ব্যাপকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হন। ফলে এ রোগ প্রতিরোধে কৃষিবিজ্ঞানের প্রতি দৃষ্টি যাবেÑ এটাই স্বাভাবিক। আনন্দের বিষয় হলো, তারা বিষয়টি আমলে নিয়েছেন এবং সাফল্য এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্লাস্ট দেখা দিলে নতুন জাত উদ্ভাবনের প্রতি উৎসাহিত হন বিজ্ঞানীরা। নতুন এ জাতটি ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক গম গবেষণা কেন্দ্রের সহযোগিতায় মেক্সিকো থেকে আনা হয়। এরপর দেশের চাষাবাদ উপযোগী করতে বাকি সময়টা লাগে।
সারা দেশে কৃষকের জন্য বড় সমস্যা সেচের পানির অভাব, বৈরী আবহাওয়া ও উর্বরা শক্তি হ্রাস। এর ওপর বিভিন্ন সময় ফসলের নতুন নতুন রোগ কৃষককে কাবু করে ফেলেছে। আবার উর্বরাশক্তি হ্রাসের ফলে ধীরে ধীরে জমি হয়ে উঠছে চাষের অনুপযোগী। এ অবস্থায় নতুন উদ্ভাবিত জাতের ফসল আবাদের যে সুযোগ তৈরি হয়েছে, তা নিশ্চয়ই একটি আশাব্যঞ্জক খবর।
আমরা প্রত্যাশা করব, নতুন উদ্ভাবিত গমের এ জাতটি যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দ্রুতই কৃষকের হাতে পৌঁছবে। এখানে একটি বিষয় লক্ষণীয়, খাদ্যশস্যের উৎপাদন যেমন বাড়াতে হবে, তেমনি উদ্ভাবিত এ জাতের ক্রিয়া ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যাচাই-বাছাই করাও জরুরি। এর আগে বিভিন্ন সময় আমদানিকৃত বিভিন্ন ফসলের জাত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। আমরা আশা করি, গম গবেষণা ইনস্টিটিউট এ বিষয়ে সতর্ক থাকবে।
গম আমাদের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ ফসল। কিন্তু লক্ষ করলে দেখা যাবে, এর উৎপাদন কমে গেছে। কৃষক গম চাষ থেকে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। আমাদের প্রত্যাশা, অধিক রোগপ্রতিরোধী এবং উৎপাদনশীল এই জাত উদ্ভাবনের পর এর উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। এজন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মহল কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।