দেশের বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার সক্ষমতা বাড়াতে ৬১ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার ঋণ দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। স্থানীয় মুদ্রায় (৮০ টাকা প্রতি ডলার ধরে) যার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৪ হাজার ৯২৮ কোটি টাকা। এ লক্ষ্যে সোমবার একটি চুক্তি সই হয়েছে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে চুক্তিতে সই করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) ভারপ্রাপ্ত সচিব কাজী শফিকুল আযম এবং এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর কাজুহিকো হিগুচি। বাংলাদেশ পাওয়ার সিস্টেম ইনহ্যান্সমেন্ট অ্যান্ড ইফিসিয়েন্সি ইমপ্র“ভমেন্ট শীর্ষক প্রকল্পে এ অর্থ ব্যয় করা হবে। জুলাই ২০১৬ হতে জুন ২০২০- এ চার বছর মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্য ধরা হয়েছে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ১০৫ কোটি ৭৫ লাখ মার্কিন ডলার। এর মধ্যে এডিবি দেবে ৬১ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার এবং অবশিষ্ট ৪৩ কোটি ৯৫ লাখ মার্কিন ডলার সমপরিমাণে অর্থ সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন থেকে ব্যয় করা হবে। এডিবি ছাড়াও এ কর্মসূচিতে সহ-অর্থায়নকারী হিসাবে জাপান ফান্ড ফর পোভারটি রিডাকশন (জেএফপিআর) শূন্য ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান দেবে। এডিবি ওসিআর এবং ওসিআর কনসেশনাল ঋণ ৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ২৫ বছরে পরিশোধ করতে হবে। ওসিআর কনসেশনাল ঋণের বার্ষিক সুদের হার ২ শতাংশ এবং ওসিআর ঋণের সুদেও হার লাইবরভিত্তিক। এছাড়া ওসিআর ঋণের জন্য অব্যয়িত অর্থের ওপর শূন্য দশমিক ১৫ শতাংশ হারে কমিটমেন্ট চার্জ এবং শূন্য দশমিক ১০ শতাংশ হারে ম্যাচুরিটি প্রিমিয়াম প্রযোজ্য হবে।
অনুষ্ঠানে কাজী শফিকুল আযম বলেন, এটি এক বিলিয়ন ডলারের (১০৫ কোটি ৭৫ লাখ ডলার) প্রকল্প, যা দেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। আমাদের প্রেক্ষাপটে তাই প্রকল্পটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রকল্প বাস্তবায়নে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে পিজিসিবি, ডেসকো এবং বিআরইবি- এ তিন বাস্তবায়নকারী সংস্থার মধ্যে সমন্বয় করা।
কাজুহিকো হিগুচি বলেন, এ প্রকল্পে অর্থায়ন করতে পারাটা এডিবির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর মাধ্যমে প্রায় ১০ লাখ পরিবার বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আসবে। এসব পরিবারের অধিকাংশই গ্রামাঞ্চলের বাসিন্দা। এছাড়া প্রকল্পটি ঢাকার বর্ধিত বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানো এবং বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়নে সাহায্য করবে।
বিদ্যুৎ বিভাগের আওতায় পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড, ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই লিমিটেড (ডেসকো) এবং বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) এ ঋণের আওতায় নেয়া প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নকারী সংস্থা হিসেবে কাজ করবে। এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, দেশের বিদ্যুৎ খাতের সঞ্চালন এবং বিতরণ সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। এর মাধ্যমে দক্ষ এবং নির্ভরযোগ্য বিদ্যুতে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা। ঋণের আওতায় যেসব কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে সেগুলো হল- আমিনবাজার-মাওয়া-মংলা ৪০০ কেভি ট্রান্সমিশন লাইন প্রজেক্ট ডেসকো এলাকায় তত্ত্বাবধায়ক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা স্থাপন এবং উপাত্ত আহরণ, দুই প্রকল্পের আওতায় বিতরণ ব্যবস্থার আপগ্রেডেশন পুনর্বাসন এবং ঘনায়ন। এর মধ্যে একটি পর্যায়ে রয়েছে ঢাকা-ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগ এবং অন্য পর্যায়ে আছে রংপুর, খুলনা এবং বরিশাল বিভাগ।