২০১৮ সালে পদ্মার পানি ঢাকায় : সুবিধা পাবে ৪০ লাখ মানুষ

রাজধানীবাসীকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করার জন্য মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় নির্মাণ করা হচ্ছে ‘পদ্মা জশলদিয়া পানি শোধনাগার নির্মাণ প্রকল্প’। প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন এই প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যেই ৪০ শতাংশ শেষ হয়েছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। আর প্রকল্পের কাজ শেষ হলেই আগামী বছরের ডিসেম্বর মাস থেকেই পদ্মা নদী থেকে প্রতিদিন ৪৫ কোটি লিটার পরিশোধিত পানি রাজধানীতে সরবরাহ করা হবে। এই প্রকল্পের আওতায় পুরান ঢাকার মিটফোর্ট, নবাবপুর, লালবাগ, হাজারীবাগ, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় পরিবেশবান্ধব ও টেকশই পানি সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। এতে সুবিধা পাবে প্রায় ৪০ লাখ মানুষ।

গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করছে চাইনিজ প্রতিষ্ঠান সিএএমসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোং লি. ও ঢাকা ওয়াসা। প্রকল্পের ফেস-১ ও ফেজ-২ এর জন্য ১০৪ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। কেরানীগঞ্জের আবদুল্লাহপুর নামক স্থানে বুস্টার পাম্প স্টেশনের জন্য ১২ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। অবশিষ্ট ৯২ একর জমি পানি শোধনাগার ইনটেক চ্যানেল, অন্যান্য অবকাঠামো ও রাস্তা নির্মাণের জন্য অধিগ্রহণ করা হয়।

ইতোমধ্যে প্রকল্পের প্রশাসনিক ভবনের পাইলিং কাজসহ মূল অবকাঠামো নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। ওয়ার্কশপ ভবনের পাইলিং কাজসহ মূল অবকাঠামো নির্মাণও শেষ। হাইলিফট পাম্প স্টেশনের পাইলিং কাজসহ বটম ¯ø্যাব নির্মাণ শেষ হয়েছে। ৮০০ মিটার অপরিশোধিত পানি পরিবহন লাইনের কাজ প্রেসার টেস্টসহ সফলতার সঙ্গে শেষ হয়েছে। ১ হাজার ৮০০ মিটার পানির লাইন নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে।

প্রকল্প কাজ পরিদর্শনে গেলে প্রকল্প নির্মাণ প্রতিষ্ঠান সিএএমসির প্রজেক্ট ম্যানেজার জং জাওইয়ং পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে প্রকল্পের কার্যক্রম তুলে ধরেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান, সংস্থার বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক উত্তম কুমার রায়, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আকতারুজ্জামান, প্রকল্প পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

ঢাকা ওয়াসা ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও ভূ-গর্ভস্থ পানির চাপ কমাতে ঢাকা শহরে একটি পরিবেশবান্ধব ও টেকসই পানি সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তুলতেই এই প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এ প্রকল্প কাজ সফলভাবে সমাপ্ত হলে সরবরাহকৃত সারফেস ও আন্ডারগ্রাউন্ড পানির অনুপাত হবে ৪৫:৫৫, যা বর্তমানে ৭৮:২২। পরিবেশবান্ধব, টেকসই ও গণমুখী পানি সরবরাহ ব্যবস্থা চালুর যে উদ্যোগ ঢাকা ওয়াসা নিয়েছে এই প্রকল্প তারই অংশ হিসেবে বাস্তবায়িত হচ্ছে বলে তিনি জানান। উল্লেখ্য, চায়নার এক্সিম ব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ৩ হাজার ৩৭৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা।