ঝিনাইদহে নতুন ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন দুদু মিয়া নামের এক কৃষক। ইতিমধ্যে ওই জাতের ধান এলাকায় দুদুলতা বলে পরিচিতি লাভ করেছে। উচ্চ ফলনশীল ও রোগবালাই প্রতিরোধক এই জাতের ধান এখন রবি মৌসুমে চাষ করছেন কৃষক দুদু মিয়া।
জানা যায়, ২০১২ সালে সদর উপজেলার কালুহাটি গ্রামের কৃষক এমদাদুল হক দুদু মিয়া সুবললতা ধানের মধ্যে নতুন জাতের ধানের ৩টি গোছার সন্ধান পান। পরপর দুই বছর সেই ধান পরিচর্যা করে বীজ তৈরি করে নিজের জমিতে আবাদ শুরু করেন। বালাইসহিষ্ণু এই ধানের জাতটি উচ্চতায় খাটো হওয়ার কারণে ঝড় বা বাতাসে হেলে পড়ে না। পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম হয়। গত বছর কৃষক দুদু মিয়া ৩ বিঘা জমিতে ১০০ মণ ধান উৎপাদন করেন। এ বছরও ধানের উৎপাদন ভালো হয়েছে। ৩ বিঘা জমির ধান কাটতে শুরু করেছেন তিনি। কিছুদিনের মধ্যেই নতুন ধান তিনি ঘরে তুলবেন।
কৃষক দুদু মিয়া জানান, নতুন জাতের এই ধান শীষপ্রতি সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ পর্যন্ত পুষ্ট ধান হচ্ছে; যা অন্য জাতের ধানের পরিমাণ থাকে ১৮০ থেকে ২০০। ধান গাছ আকারে ছোট হওয়ার কারণে ঝড়ো বাতাসে হেলে পড়ে না। এ ছাড়া রোগবালাই এই ধানে নেই বললেই চলে। ধান গাছটির আকার ছোট হওয়ার কারণে পরিচর্যা করতে সুবিধা হচ্ছে। ধানে কোনো চিটা না হওয়ায় ফলন ভালো হচ্ছে। এ ধান থেকে যে চাল পাওয়া যাচ্ছে তা দেখতে অনেকটা বেগুন বিচির মতো। চালের স্বাদও ভালো। দামও ভালো পাওয়া যায়। কৃষক দুদু মিয়ার দাবি, ব্রি-বিজ্ঞানীদের সহযোগিতায় প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে দুদুলতা নামে জাত হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. খান মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের কালুহাটি গ্রামে নতুন জাতের ধানের খবর পেয়ে আমি আমার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের নিয়মিত সেখানে পাঠিয়েছি। আমি নিজেও কয়েকবার গিয়েছি। গত ২ বছর ধরে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষক দুদু মিয়াকে প্রশিক্ষণসহ সব ধরনের প্রযুক্তিগত সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।