অবশেষে বাস্তব রূপ পাচ্ছে তিস্তা সেতু

অবশেষে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জবাসীর স্বপ্নের তিস্তা সেতু নির্মিত হতে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তর জানিয়েছে, সম্ভাব্য দ্রুততম সময়েই এর কাজ শুরু হবে। কর্মকর্তারা এলাকা পরিদর্শনে এসে বিষয়টি জানানোর পর সুন্দরগঞ্জবাসীর মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, গত বছরের ১৬ মার্চ সেতু নির্মাণ প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন করা হয়। সম্প্রতি সৌদি দাতা সংস্থা এসএফডি এবং ওএফআইডির সঙ্গে ঋণ চুক্তি সই হয়েছে। এ ছাড়া সেতুর ডিজাইন, পরিবীক্ষণ, তদারকি উপদেষ্টা ফার্ম নিয়োগ ও ঠিকাদার তালিকাভুক্তির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ৭৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তিস্তা নদীর ওপর এই তিস্তা সেতু নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি এলজিইডির অধীনে সেতুর উভয়পাশে নির্মিত হবে ৮০ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক।

এলাকাবাসী ও উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, গত কয়েক বছর ধরে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর এলাকায় তিস্তা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের জন্য আন্দোলন চলছে। সাবেক প্রধান শিক্ষক ও সমাজসেবী শরিয়ত উল্যাহ মাস্টারের নেতৃত্বে এই আন্দোলনে এলাকার সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেয়। অবশেষে বর্তমান সরকার তিস্তা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করে। সুন্দরগঞ্জের চণ্ডিপুর ইউনিয়নের হরিপুর থেকে চিলমারি উপজেলার জোরগাছ ইউনিয়নের রজবখালি এলাকা পর্যন্ত এই সেতু নির্মিত হবে। সেতুর দৈর্ঘ্য এক হাজার ৪৯০ মিটার (প্রায় দেড় কিমি) এবং প্রস্থ হবে সাত দশমিক ৩২ মিটার। জমি অধিগ্রহণ ও আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণসহ সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৩০ কোটি টাকা। এদিকে সেতুর উভয় পাশে ৮০ কিমি আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মিত হবে। মহাসড়কের জন্য ১৩৩ একর জমি অধিগ্রহণ অনুমোদনের অপেক্ষায়।

আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী শরিয়ত উল্যাহ মাস্টার জানান, এক যুগের আন্দোলনের ফসল এই তিস্তা সেতুর কাজ শুরু হবে জানার পর থেকে এলাকায় আনন্দের বন্যা বইছে। তিনি বলেন, ‘সেতুর দুই পাশে প্রস্তাবিত আঞ্চলিক মহাসড়কটি কুড়িগ্রামের চিলমারি উপজেলা সদর থেকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর, পাচপীর বাজার, চণ্ডিপুর, গাইবান্ধা সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর বাজার হয়ে সাদুল্যাপুর উপজেলার ধাপেরহাট এলাকায় ঢাকা-রংপুর জাতীয় মহাসড়কে মিলিত হবে। এটি নির্মিত হলে কুড়িগ্রামের সঙ্গে ঢাকার দূরত্ব ৬০ কিমি কমে যাবে। পাশাপাশি এলাকায় অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। জীবনের এই শেষ ভাগে এসে সেতুটি দেখে যেতে চাই। ’

গাইবান্ধা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাকসুদুল আলম বলেন, সেতু নির্মাণ প্রকল্পটি নিয়ে অনেক দীর্ঘসূত্রতা কাজ করেছে। কিন্তু এখন সেতু নির্মাণে আর কোনো বাধা নেই। তিনি বলেন, ডিজাইন উপদেষ্টা ফার্ম সেতুর ডিজাইন যাচাই-বাছাই করে দিলে দরপত্র আহ্বান করা হবে।

মন্তব্য