দৃষ্টিনন্দন সেতু এনেছে স্বস্তির হাসি

ধাঁই ধাঁই করে উঠছে আকাশচুম্বী ভবন আর একের পর এক উড়াল সেতু। সেই শহরে পচা পানির খাল রোজ নৌকায় পারাপার? হ্যাঁ, এমনই ছিল অনেক বছর ধরে। রাজধানীতে ঢাকা-১৩ সংসদীয় এলাকার মনসুরাবাদ আর ঢাকা-১৪ সংসদীয় এলাকার গৈদারটেক। মাঝে কল্যাণপুর খাল। পাঁচ মিনিটের দূরত্ব নৌকায় পেরুতে ৩০ মিনিট। রিকশা বা মোটরগাড়ি হলে অনেক ঘুরপথ। সে দুঃখ ঘুচেছে। এলাকাবাসীর মুখে এখন স্বস্তির হাসি।

স্থানীয় দুই সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আসলামুল হকের উপস্থিতিতে গত ৮ মে আনুষ্ঠানিকভাবে দৃষ্টিনন্দন সেতুটি উদ্বোধন করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক। এ সময় তিনি বলেন, এলাকাবাসীর অনেক দিনের দাবি পূরণ করা সম্ভব হলো।

গত সপ্তাহে গৈদারটেক এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, অনেক মানুষ নবনির্মিত সেতুটি ঘুরেফিরে দেখছেন। জানা গেল, রোজ বিকেলে সেতুর আশপাশে বেড়াতে আসেন স্থানীয়রা । সেদিন তপ্ত দুপুরেই নিকটস্থ একটি বেসরকারি কোম্পানির কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ ঘুরছিলেন। বললেন, ‘আমাদের দাবি ছিল_ পূরণ হয়েছে।

এখন ভালো লাগছে। রাজধানীতেই থাকতাম, অথচ নৌকায় করে চলাচল করতে হতো! মনে হতো, গ্রামে বসবাস করছি।

এখন খুব সহজেই এপার-ওপার চলাচলা করা যাবে।’

রাজধানীর অন্যতম দীর্ঘ সড়ক মিরপুর রোডে শ্যামলীতে পশ্চিমে রিং রোড, আদাবর, পিসি কালচার হাউজিং ও মনসুরাবাদ ঢাকা-১৩ সংসদীয় আসনের মধ্যে। আর খালের অন্যদিকে ঢাকা-১৪ সংসদীয় আসনের মধ্যে পড়েছে গৈদারটেক, মাজার রোড, গাবতলী, কল্যাণপুর। সেতুটি যুক্ত করেছে ১০ নম্বর ও ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের এলাকাকে। এখন মোহাম্মদপুর ও আদাবরবাসী সহজেই গাবতলী, মিরপুর এলাকায় যাতায়াত করতে পারবেন। মনসুরাবাদের বাসিন্দা রকিফ উল আলম বলেন, ‘আগে রিং রোড, শ্যামলী ঘুরে যাতায়াত করতে হতো। এখন যাতায়াত খুব সহজ হয়েছে। চাই গণপরিবহন।’

ডিএনসিসির ৩০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল হাসেম হাসু জানান, গৈদারটেক-মনসুরাবাদ সংযোগ সেতু তিন লাখ লোকের সরাসরি উপকার করবে। সেতুর পাশাপাশি গৈদারটেক অংশের ১২ ফুট চওড়া রাস্তা ৩০ ফুট করার জন্য এলাকাবাসী জমি ছেড়েছেন। সৌন্দর্যও বাড়ানো হয়েছে। ১০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবু তাহের বলেন, ‘সেতুটি নির্মিত হওয়ায় সবার উপকার হয়েছে।’

সেতুর কাছে আবুল হোসেন গাড়ির যন্ত্রাংশের ব্যবসা করেন। আগে বহু কষ্ট করে যন্ত্রপাতি আনা-নেওয়া করতে হতো। এখন দোকানের দোরগোড়ায় গাড়ি থামে। এক গাল হেসে বললেন, ‘অনেক সুবিধা হয়েছে।’

সংযোগ সেতুর পাশাপাশি মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ থেকে বাঁশবাড়ী বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত সড়কও মেরামত করা হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে এর কাজ শেষ হয়েছে। সংযোগ সেতুটির দৈর্ঘ্য ৪৫ মিটার ও প্রস্থ ৯ দশমিক ১৪ মিটার। এটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১০ কোটি টাকা।