ইমাজিন কাপের বিশ্ব পর্বে বাংলাদেশ

মাইক্রোসফট প্রতি বছর তরুণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিতে আয়োজন করে ‘ইমাজিন কাপ’ প্রতিযোগিতার। এই সফটওয়্যার কনটেস্টে অংশগ্রহণ এখন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের তরুণ সফটওয়্যার ডেভেলপারদের জন্য একটা স্বপ্নের মতো। মাইক্রোসফটের আয়োজনে এবারের ইমাজিন কাপেও অংশ নেয় বাংলাদেশ। বিভিন্ন বাস্তবিক সমস্যার সমাধান করাই এই প্রতিযোগিতার মূল লক্ষ্য। বিগত কয়েক বছর ধরে ইমাজিন কাপের আন্তর্জাতিক আসরে প্রতিনিধিত্ব করার সৌভাগ্য হয়েছে বাংলাদেশ দলের।

এমনকি কয়েকবার পুরস্কারও জিতেছে, আর এবার তো নিয়ে এসেছে পিপলস চয়েস অ্যাওয়ার্ডের মতো সম্মান। এ দেশের তরুণরা প্রতিনিয়তই বহির্বিশ্বে নানাভাবে উজ্জ্বল করছে দেশের নাম। এবারের মাইক্রোসফট ইমাজিন কাপের আঞ্চলিক পর্যায়ের চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় ফিলিপাইনের ম্যানিলায়। ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলাতে অনুষ্ঠিত মাইক্রোসফট ইমাজিন কাপ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক অংশের ফাইনালে জিতে ওয়ার্ল্ড ফাইনালে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের ফাইনালে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, শ্রীলংকা, নেপাল ও লাওস থেকে নির্বাচিত দলের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেছে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বকারী দল- টিম প্যারাসিটিকা। বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীদের দল ‘টিম প্যারাসিটিকা’। বুয়েটের তিন ছাত্র- তৌহিদুল ইসলাম, ফজলে রাবি্ব ও সৈয়দ নাকিব হোসেন এ দলের সদস্য। দলটি তাদের ‘ফাস্টনোসি’ অ্যাপকে সামনে রেখে প্রতিযোগিতা করেছে। অ্যাপটির মাধ্যমে সহজেই পরজীবী রোগ যেমন_ টিউবারকুলোসিস, ম্যালেরিয়া ইত্যাদি রোগের লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়। মাইক্রোসফট বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোনিয়া বশির কবির বাংলাদেশ দলের দুটি সুসংবাদ জানিয়েছেন। একটি হচ্ছে, ফিলিপাইনের ম্যানিলায় অনুষ্ঠিত মাইক্রোসফট ইমাজিন কাপের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের ফাইনালে বাংলাদেশ দল টিম প্যারাসিটিক ওয়ার্ল্ড ফাইনালের জন্য নির্বাচিত হয়েছে।

আরেকটি হচ্ছে, পিপলস চয়েজ ক্যাটাগরিতে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে পুরস্কারও পেয়েছে। সোনিয়া বশির কবির ফেসবুকে এক পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ম্যানিলায় একমাত্র দেশ যারা দুটি পুরস্কার জিতেছে।

আগামী জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বসবে মাইক্রোসফট ইমাজিন কাপের ১৫তম ওয়ার্ল্ড ফাইনালের আসর। এ বছর বিশ্বের ১০০টিরও বেশি দেশ থেকে প্রতিযোগীরা বিভিন্ন পর্বে প্রতিযোগিতায় অংশ নেন এবং এদের থেকে শীর্ষ ৩০টি দল অংশ নেবে ওয়ার্ল্ড ফাইনাল পর্বে। সৃজনশীলতা, বুদ্ধিমত্তা ও প্রযুক্তিতে গভীর সংযোগের সংমিশ্রণের মধ্য দিয়ে সহজ জীবনযাপন ও কাজের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যার সহজ সমাধান বের করার ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতাটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। প্রতি বছর হাজারো শিক্ষার্থী ইমাজিন কাপ জেতার মাধ্যমে অর্থ, ভ্রমণ, পুরস্কার ও সম্মান অর্জনের লক্ষ্যে একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে থাকে। গত কয়েক বছরে প্রতিযোগিতাটি বিশ্বের সব মেধাবী ও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ উদ্ভাবক ও উদ্যোক্তাদের এমন একটি পল্গ্যাটফর্ম দিয়ে আসছে, যেখানে তারা তাদের অভিনব ধারণাগুলো প্রদর্শনের পাশাপাশি সেগুলো পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। প্রতিযোগিতাটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় এবং অগ্রগামী একটি প্রোগ্রামে পরিণত হয়েছে, যা আয়োজন করে থাকে বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট। এ বছর ইমাজিন কাপের প্রস্তুতি বেশ ভালোভাবেই নিয়েছিল বাংলাদেশ। বিশ্ববিদ্যালয়ে বুট ক্যাম্প, আইডিয়া ক্যাম্পসহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতা করে তরুণ ডেভেলপারদের শানিত করা হয়েছিল। আর তার ফলেই সাফল্য। আঞ্চলিক পর্ব জয়ের পর নজর এখন বিশ্ব জয়ে। আঞ্চলিক পর্ব জয় শেষে দুটি পুরস্কার জিতে বিশ্বকে নিজের আগমনী বার্তা জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।