৪৪ বছর ধরে বাইসাইকেল চালিয়ে গ্রামবাসীকে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছেন জহিরন বেওয়া। প্রতিদিন গ্রামে গ্রামে ঘুরে অসুস্থ দরিদ্র মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা পেঁৗছে দেওয়ায় হলো তার মূল কাজ। জহিরন বেওয়া উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের তালুক দুলালী গ্রামের মৃত সায়েদ আলীর স্ত্রী। উপজেলায় সবাই তাকে নানি বললেই চেনেন। মুক্তিযুদ্ধের চার বছর আগে স্বামীর মৃত্যুর পর তিন ছেলে আর দুই মেয়েকে নিয়ে সংসার সংগ্রামে নেমে পড়েন জহিরন। ৮ বছর আগে বড় ছেলে দানেশ আলীর মৃত্যুর পর ছোট ছেলে তোরাব আলীকে নিয়ে বেঁচে আছেন। ১৯৭৩ সালে জহিরন পরিবার ও পরিকল্পনা বিষয়ে ৬ মাসের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এরপর চুক্তিভিত্তিক মাসিক মজুরিতে কাজে যোগ দেন। আর অর্জিত অভিজ্ঞতা দিয়ে বাড়িতে বসে না থেকে আবারও গ্রামবাসীর স্বাস্থ্যসেবায় নেমে পড়েন তিনি।
চিকিৎসার জন্য তাকে কোনো অর্থ দিতে হয় না। শুধু ওষুধের জন্য টাকা দিতে হয়। উপজেলার ৩০টি গ্রামের প্রায় দুই হাজারের বেশি পরিবারের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে তার। প্রতিদিন বাইসাইকেল চালিয়ে কমপক্ষে ৭টি গ্রামের ৭০টি বাড়ির রোগীর খোঁজখবর নেন তিনি।
ভেলাবাড়ির রহমত আলী ও চন্দনপাট গ্রামের জিলহাজ আলী জানান, ৪৪ বছর ধরে জহিরন বেওয়া বাইসাইকেল চালিয়ে গ্রামবাসীর স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছেন। ভেলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী বলেন, এই বয়সেও মানুষের প্রতি জহিরন বেওয়ার যে ভালোবাসা, তা তাকে স্মরণীয় করে রাখবে।