সঠিক পরিচর্যা আর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর পটুয়াখালীর কয়েকটি উপজেলায় তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। চাষি ক্ষেত থেকে তরমুজ তুলে বাজারজাত করতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। পটুয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলা থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তরমুজ সরবরাহ করা হচ্ছে। আর দাম ভালো পাওয়ায় খুশি চাষিও।
পটুয়াখালী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে পটুয়াখালীতে ১৮ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্য কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী, ধুলাশ্বর, লতাচাপলি, কুয়াকাটা, চরচাপলি ও রাঙ্গাবালী উপজেলার রাঙ্গাবালী সদর, চরমোন্তাজ, কাছিয়বুনিয়া, গলাচিপার আমখোলা এবং বাউফলের বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। সরেজমিন দেখা গেছে, প্রতিদিন লঞ্চ, ট্রলার এবং ট্রাকযোগে গলাচিপা, কুয়াকাটা, কলাপাড়া এবং রাঙ্গাবালী উপজেলার বেশ কয়েকটি পয়েন্ট থেকে ঢাকা, রাজশাহী, দিনাজপুর, বগুড়া, ঝিনাইদহসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তরমুজ সরবরাহ করা হচ্ছে। চাষি ও আড়তদাররা জানান, এসব জেলাসহ দেশজুড়েই পটুয়াখালীর তরমুজের কদর রয়েছে।
রাঙ্গাবালী উপজেলার কাউখালী গ্রামের রাহেলা বেগম জানান, তিনি এ বছর ২ একর জমিতে তরমুজের আবাদ করেছেন। এতে তার ব্যয় হয়েছে আনুমানিক ৪০ হাজার টাকা। তিন ধাপে এ পর্যন্ত আড়াই লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন। তিনি আরও জানান, গেল বছরের তুলনায় এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। তবে মার্চে বৃষ্টির কারণে কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তা না হলে তার ক্ষেতে আরও ৫০ হাজার টাকার সমপরিমাণ তরমুজ উৎপাদন হতো। এ বছর দাম ভালো পাচ্ছেন বলে জানান তিনি।
রাঙ্গাবালী উপজেলা যুগীর হাওলা গ্রামের তরমুজচাষি আবু হানিফ জানান, এ বছর তিনি ৬০ হাজার টাকা ব্যয়ে ৪ একর জমিতে তরমুজের আবাদ করেছেন। এর মধ্যে বৃষ্টিতে ১ একর জমির তরমুজ নষ্ট হয়ে যায়। ৩ একর জমির তরমুজ প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে তিনি রক্ষা করতে পেরেছেন। তিনি এ পর্যন্ত তিন ধাপে সাড়ে ৩ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন। এ বছর তরমুজ বিক্রি করে তার ৩ লাখ টাকা লাভ হয়েছে। উপজেলার গাব্বুনিয়া গ্রামের দুদা মুন্সী জানান, তার ছোট ভাই ইমাম মুন্সী এবং তিনি মিলে ৯ একর জমিতে তরমুজের চাষ করেছেন। এতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তারা দুই ভাই এ পর্যন্ত স্থানীয় আড়তদারের কাছে চার ধাপে অন্তত ১২ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন।
চালিতাবুনিয়ার নাসির সিকাদর জানান, গেল বছরের তুলনায় এ বছর তার ক্ষেতে ফলন ভালো হয়েছে। তিনি এ বছর ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ব্যয় করে ৪ একর জমিতে তরমুজের আবাদ করে এ পর্যন্ত দুই ধাপে ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন। তাতে সব খরচ বাদে অন্তত ৫ লাখ টাকা লাভ হয়েছে। পটুয়াখালী জেলা শহরের আড়ত মালিক মোঃ খায়রুল হাসান জানান, এ বছর তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। গেল বছরের তুলনায় এ বছর কৃষক দাম ভালো পাচ্ছেন।