ট্রানজিট পাচ্ছে ভুটান, বাংলাদেশ পাবে জলবিদ্যুৎ

তিন দিনের দ্বিপক্ষীয় সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল মঙ্গলবার ভুটান সফরে যাচ্ছেন। অটিজম বিষয়ে একটি কনফারেন্সে অংশগ্রহণকে কেন্দ্র করে এ সফরের আয়োজন হলেও উপআঞ্চলিক বিবেচনায় বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর এ সফর। ট্রানজিট-ট্রানশিপমেন্ট, কানেকটিভিটি ও জলবিদ্যুৎ ইস্যুতে সহযোগিতা রয়েছে সফরের এজেন্ডায়। প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে পাঁচটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের। এগুলো হচ্ছে দ্বৈতকর পরিহার চুক্তি, সাংস্কৃতিক সহযোগিতা চুক্তি, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড টেস্টিং সংস্থার সঙ্গে ভুটানের স্ট্যান্ডার্ড টেস্টিং সংস্থার একটি সমঝোতা স্মারক, কৃষি সহযোগিতার জন্য সমঝোতা স্মারক এবং বাংলাদেশের নৌপথ ব্যবহার করে ভুটানের পণ্য যাতায়াতের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক। সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হলে ভুটান বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে প্রয়োজনীয় ট্যাক্স দিয়ে নৌপথে পণ্য পরিবহনের সুযোগ পাবে। অন্যদিকে ভুটান থেকে বাংলাদেশে জলবিদ্যুৎ নিয়ে আসার ক্ষেত্রে অগ্রগতি আশা করা হচ্ছে এই সফরে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে রাজধানী থিম্পুতে বাংলাদেশ দূতাবাসের নিজস্ব ভবন উদ্বোধন হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই সফরেই। কূটনৈতিক সূত্র জানায়, আগামী ১৯-২১ এপ্রিল ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন অটিজম অ্যান্ড নিউরো ডেভেলপমেন্ট ডিজঅর্ডার ভুটান ২০১৭’ শীর্ষক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার অনুরোধে সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশেষজ্ঞ পরামর্শক প্যানেলের সদস্য সায়মা ওয়াজেদ হোসেন ভুটানের থিম্পুতে ওই সম্মেলন আয়োজনে উদ্যোগ নেন। এতে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর ভুটান সফরে তার মেয়ে ও অটিজম বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটির চেয়ারম্যান সায়মা ওয়াজেদ পুতুলও যেতে পারেন। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ভুটানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের কার্যালয়, সূচনা ফাউন্ডেশন এবং অ্যাবিলিটি ভুটান সোসাইটি এ সম্মেলনের আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী এ সফরে ভুটানের রাজা জিগমে খেসার ওয়াংচুকের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং টোবগের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর দুই দেশের মধ্যে পাঁচটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের সম্ভাবনা আছে। এগুলো হচ্ছে দ্বৈতকর পরিহার চুক্তি, সাংস্কৃতিক সহযোগিতা চুক্তি, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড টেস্টিং সংস্থার সঙ্গে ভুটানের স্ট্যান্ডার্ড টেস্টিং সংস্থার একটি সমঝোতা স্মারক, কৃষি সহযোগিতার জন্য সমঝোতা স্মারক এবং বাংলাদেশের নৌপথ ব্যবহার করে ভুটানের পণ্য যাতায়াতের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক। নৌপরিবহন সংক্রান্ত এ সমঝোতা স্মারকে দুটি রুট প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রথম রুটটি হচ্ছে মংলা-কাউখালী-বরিশাল-চাঁদপুর-মাওয়া-আরিচা-সিরাজগঞ্জ-চিলমারী-দইখাওয়া এবং দ্বিতীয় রুটটি হচ্ছে চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-মাওয়া-আরিচা-সিরাজগঞ্জ-চিলমারী-দইখাওয়া। বাংলাদেশের লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা উপজেলার অন্তর্গত দইখাওয়া সীমান্ত ও ভারতের ধুবড়ি সীমান্ত দিয়ে ভুটানের পণ্য আদান-প্রদান হবে বলে তিনি জানান। প্রস্তাবিত এ রুটে ভুটান তার পণ্য আদান-প্রদান করলে তাদের পরিবহন খরচ কম হবে এবং বাংলাদেশও তাদের কাছ থেকে সেবা প্রদানের জন্য ট্যাক্স পাবে।