প্রধানমন্ত্রীর সফর এক, প্রাপ্তি অনেক

নাঈমুল ইসলাম খান
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে এবার আমাদের প্রাপ্তি অধিকতর মর্যাদা, উচ্চতর দক্ষতা ও জ্ঞানের ক্ষেত্রে সহযোগিতা এবং ব্যাপক বৈদেশিক বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে দিল্লির গুরুত্বপূর্ণ পার্কস্ট্রিট এর পুনঃনামকরণ, দুই দেশের যৌথ উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর জীবন ভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণ এবং সকলকে আশ্চর্য করে দিয়ে অনির্ধারিতভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ব্যক্তিগত উপস্থিতি ভারত বাংলাদেশেকে কতটা উচ্চতায় মর্যাদা ও গুরুত্ব প্রদান করে সেটা প্রকাশ করেছ্।ে
বাংলাদেশে অবকাঠামো খাতে দুইধাপে পূর্ববর্তী ২ দশমিক ৮৬২ বিলিয়ন ডলারের ঋণ এর পাশাপাশি নতুন ধাপে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারসহ সামরিক খাতে আরো ৫শ মিলিয়ন ডলারের ঋণ বাংলাদেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আরো গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে ভারতের বেসরকারি খাত, আগামী কয়েক বছরে বাংলাদেশে প্রতিশ্রুত ৯ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করলে।
জ্বালানি ও বিদ্যুৎখাতেও সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্প্রসারিত হচ্ছে। নতুন করে ৯শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়ার বিষয়ে অগ্রগতি হচ্ছে। সঙ্গে পশ্চিমবাংলা থেকে আরও এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দেওয়ার প্রস্তাব পাওয়া গেছে।
ভারতের সঙ্গে হাইস্পিড ডিজেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, এলএনজি, এলপিজি এবং ভারতীয়দের খরচে আন্তঃদেশীয় পাইপলাইন এবং আরো রয়েছে বাংলাদেশের একটি এলপিজি টার্মিনাল নির্মাণে ভারতীয় সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি।
ভারত-বাংলাদেশ সামরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রটিও সম্প্রসারণে কিছু সমঝোতা হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে পণ্য ও গণপরিবহন সম্প্রসারণেও ব্যাপক অগ্রগতি হচ্ছে। কলকাতা-ঢাকা মৈত্রী এক্সপ্রেসের উন্নয়ন, খুলনা-কলকাতা রেল যোগাযোগ পুনঃপ্রতিষ্ঠা, ভারতের রাধিকাপুর এবং বাংলাদেশের বিরলের মধ্যে রেল যোগাযোগ পুনরায় চালু করা। আখাউড়া এবং আগরতলার মধ্যে নতুন রেল সংযোগ প্রতিষ্ঠা এবং পঞ্চগড় ও শিলিগুড়ির মধ্যে নতুন রেল সংযোগের সম্ভাব্যতা যাচাই এবং সবশেষে ঢাকা থেকে দিল্লি পর্যন্ত ট্রেনে মালামাল পরিবহনের ব্যবস্থা দুই দেশের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগে বিরাট অবদান রাখবে। ভারত বাংলাদেশের মধ্যে উচ্চতর জ্ঞান ও দক্ষতা বিনিময়ের জন্য তথ্যপ্রযুক্তির অবকাঠামো, জ্বালানি, মহাকাশ বিজ্ঞান, শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক প্রকল্প, নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ খাত, সাইবার নিরাপত্তা ইত্যাদি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সক্ষমতা বাড়াতে ভারতের সহযোগিতার সমঝোতা খুবই সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র। দুই দেশে সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টায় এবং সীমান্ত ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে ও নিজেদের মধ্যে সহযোগিতা সম্প্রসারণে ব্যাপক উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে ।
পর্যটনক্ষেত্রে সমুদ্রপথে পর্যটন এবং ক্রুইজ সার্ভিস দুই দেশের নাগরিকদের বিনোদনে আকর্ষণীয় সুযোগ সৃষ্টি করবে। তিস্তা চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল না, হয়ওনি। এক্ষেত্রে হয়তো আরও ধৈর্য্য ধরতে হবে, অনেক কাজ করতে হবে। আমরা আশাবাদী ।