ছেলেবেলায় দেখেছি আমাদের মা দাদিরা ঘরে কাজ করতেন। আমাদের বাজার সদাই করতে পাঠাতেন। বাড়ির আশপাশে তারা প্রচুর শাকসবজি চাষ করতেন। যা তাদের অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী হওয়ার মানসিকতারই বহিঃপ্রকাশ। এভাবেই গ্রামীণ নারীরা বাজার অর্থনীতির সঙ্গে জড়িত হতেন। গ্রামীণ নারীদের সামাজিক উন্নয়নে আজকে কোকা-কোলার মতো কোম্পানি এ সুযোগটি তৈরি করে দিয়েছে। ২০টি সেন্টারের মাধ্যমে ১০ হাজার লোক উপকৃত হচ্ছেন। পরবর্তীতে আরও উপকৃত হবেন। যেখানে নারী উদ্যোক্তার সঙ্গে পুরুষ উদ্যোক্তা দরকার সেখানে যৌথভাবে কাজ করলে সুফল আসবে। সম্প্রতি কোকা-কোলা ও বিল্ড আয়োজিত গ্রামীণ নারীদের ক্ষমতায়ন ও নারী উদ্যোক্তা তৈরিতে দিকনির্দেশনা শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোশাররফ হোসেইন ভুঁইয়া এনডিসি এ কথা বলেন।
আয়োজিত প্যানেল আলোচনার মূল প্রতিপাদ্য ছিল গ্রামীণ নারী উদ্যোক্তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন। প্যানেল আলোচক হিসেবে অংশ নেন ভাইস এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর চেয়ারম্যান ও সিইও মাফরুহা সুলতানা, প্রিজম বাংলাদেশের টিম লিডার আলী সাবেত, চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক কান্তারা কে খান, কোকা-কোলা ইন্ডিয়ার পরিচালক ও সিএসআর অ্যান্ড সাস্টেইনিবিলিটি শুবহা শেখর, দ্যা ফিন্যানশিয়াল এক্সপ্রেসের বিশেষ সংবাদদাতা দৌলত আক্তার মালা। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট উপদেষ্টা আসিফ ইব্রাহীম, কোকা-কোলা বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাদাব আহমেদ খান, বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভলপমেন্টের সিইও ফেরদোউস আরা বেগম প্রমুখ।
প্যানেল আলোচনায় নারী উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে প্রশংসিত উদ্যোগ ও সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় করণীয় শীর্ষক আলোচনার পাশাপাশি বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন ধ্যান-ধারণা সম্বলিত দীর্ঘমেয়াদি বাস্তবায়নযোগ্য বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনার বিষয়েও দিক-নির্দেশনা দেয়া হয়। মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উন্নতিতে নারীর অবদানকে বিশেষভাবে মূল্যায়ন করা । দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার প্রত্যয়ে বেশিসংখ্যক নারীকে সরাসরি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়। পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের প্রতিশ্রুতি মোতাবেক নারীদের কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধির নানা পদক্ষেপের বিষয়েও আলোচনা করা হয়। প্রজেক্টের আওতাধীন নারীদের কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন বাধাগুলো মোকাবেলায় ব্যবসায়িক দক্ষতা, প্রশিক্ষণ, বাজার তথ্য, কৃষি পরামর্শ, মোবাইল ব্যাংকিং ও স্বাস্থ্যসেবার মাধ্যমে তা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করা। প্রজেক্টটির কার্যক্রম শুরু হয় জামালপুর থেকে। বর্তমানে জামালপুর, খুলনা ও বাগেরহাটের ৮টি উপজেলাতে উইমেন বিজনেস সেন্টার তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
কোকা-কোলার উইমেন বিজনেস সেন্টারের তৃতীয় পর্যায়ের সম্প্রসারণের ঘোষণা দেয়া হয়। যেখানে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপ যথাক্রমে জামালপুর, খুলনা, বাগেরহাটে প্রোজেক্টের আওতায় নারীদের কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন বাধাগুলোর মোকাবেলায় ব্যবসায়িক দক্ষতা, প্রশিক্ষণ, বাজার তথ্য, কৃষি পরামর্শ, মোবাইল ব্যাংকিং ও স্বাস্থ্যসেবার মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী করা। এরই ভিত্তিতে তৃতীয় ধাপের অর্থায়ন ও সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। এটি ২০১৮ সাল পর্যন্ত চলবে। এর পরিমাণ ১ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার। প্রজেক্টটি ২০ হাজার গ্রামীণ নারীর সরাসরি আর্থিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।