এক মাসের ব্যবধানে রফতানি আয় আবার বেড়েছে। ফেব্রুয়ারিতে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় আয় কম হলেও মার্চে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ শতাংশ। এ সময় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আয় বেশি হয়েছে ২ শতাংশের মতো। মার্চের আয়ে আগের চেয়ে গতি ফেরায় চলতি অর্থবছরের গত নয় মাসে (জুলাই-মার্চে) রফতানি বেড়েছে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ শতাংশ। তবে গত কয়েক মাসে গড়ে রফতানি খারাপ হওয়ায় এ সময়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা যায়নি। লক্ষ্যমাত্রা থেকে আয় প্রায় সাড়ে ৪ শতাংশ কম।
গত কয়েক মাসে গড়ে রফতানি কমে যাওয়ার পেছনে অভ্যন্তরীণ কারণের চেয়ে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিকে দায়ী করে আসছেন রফতানিকারকরা। এবার মার্চে ভালো আয়ের পেছনে কাঁচামালের দর বৃদ্ধিকে কারণ হিসেবে মনে করেন তারা। তাদের মতে, এ কারণে পোশাকের মূল্য বেড়েছে। তবে রফতানি আয়ের বর্ধিত এ হারকে যথেষ্ট মনে করেন না তারা। কিছুটা হতাশা প্রকাশ করেছেন বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। সমকালকে তিনি বলেন, গত নয় মাসে ৪ শতাংশ এবং একক মাস হিসেবে মার্চের ১০ শতাংশ রফতানি যথেষ্ট নয়। গড় রফতানি ১০ শতাংশের ওপরে থাকার কথা। অতীতে এ সময় আরও বেশি হারে রফতানি আয় ছিল। তিনি বলেন, ডলারে আয় কিছুটা বাড়লেও মুনাফা কিন্তু বাড়ছে না। যতটুকু আয়, তার তুলনায় বেশি পরিমাণে পোশাক রফতানি হয়েছে এ সময়।
রফতানিকারকরা জানান, অর্থবছরের শেষ দিকে রফতানি আয় বৃদ্ধি পায়। এক মাস পর আয়ে গতি ফেরায় তা আগামী কয়েক মাসেও অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদী তারা।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চে পণ্য রফতানি থেকে আয় এসেছে ৩১১ কোটি ডলার। এ আয় এ সময়ের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ছয় কোটি এবং গত বছরের মার্চের তুলনায় ২৮ কোটি ডলার বেশি। গত মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩০৫ কোটি ডলার। গত বছরের মার্চে আয় হয়েছিল ২৮৩ কোটি ডলার। গত ফেব্রুয়ারিতে রফতানির পরিমাণ ছিল ২৭৩ কোটি ও জানুয়ারিতে ৩৩১ কোটি ডলার।
অন্যদিকে, গত নয় মাসের হিসাবে রফতানি হয়েছে দুই হাজার ৫৯৫ কোটি ডলারের পণ্য। আগের একই সময়ের তুলনায় এ আয় ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ বেশি হলেও এ সময়ের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৪ দশমিক ৩০ শতাংশ কম। এ সময়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল দুই হাজার ৭১১ কোটি ডলার। আগের বছর একই সময়ে আয়ের পরিমাণ ছিল দুই হাজার ৪৯৬ কোটি ডলার।
খাতওয়ারি রফতানি চিত্রে দেখা যায়, নয় মাসে প্রধান পণ্য তৈরি পোশাকের আয় বেড়েছে ২ দশমিক ৩৯ শতাংশ। রফতানি হয়েছে দুই হাজার ৯৩ কোটি ডলারের পোশাক। তবে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় কম হয়েছে ৬ শতাংশ। এ খাতের নিটের অবস্থা তুলনামূলক ভালো। আয় বেড়েছে ৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ। ওভেনের আয় বেড়েছে মাত্র শূন্য দশমিক ১৮ শতাংশ।
অন্য বড় পণ্যের মধ্যে পাটপণ্যে গড়ে রফতানি বেড়েছে ১৪ শতাংশ। ওষুধের রফতানি বেড়েছে ৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ। চামড়া পণ্যে বেড়েছে সাড়ে ১২ শতাংশ। চামড়ার পাদুকার বেড়েছে ১৩ শতাংশ। অন্যদিকে বড় পণ্যের মধ্যে রফতানি কমে যাওয়ার তালিকায় রয়েছে টেরিটাওয়েল ১৩ শতাংশ, চামড়া ৫ শতাংশ, হিমায়িত মাছ ও চিংড়ি ৫ শতাংশ।