টেকনাফের লবণমাঠে চাষীদের মুখে হাসি

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কঠোর পদক্ষেপ ও চলতি মৌসুমে বাম্পার ফলনে টেকনাফের লবণ মাঠে পর পর দু’মৌসুমে ন্যায্যমূল্য বঞ্চিত হতাশ চাষীদের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে।

জানা যায়, সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় লবণ চাষী সমিতি ও কোস্ট ট্রাস্টের মধ্যে আলোচনা শেষে লবণ বাজারজাতকারী কোম্পানীগুলো চাষীদের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে লবণ ক্রয় বাধ্যতামূলক করার কঠোর পদক্ষেপের ঘোষণা করে। এ ছাড়া একইভাবে সরাসরি মাঠ থেকে সরকার ১ লাখ টন লবণের মওজুদ গড়ে ঘোষণা করে।

এ খবর বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়া এবং লোকেমুখে ও সমিতি মারফত টেকনাফের প্রত্যন্ত এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে নাফনদীর লবণ-পানি প্রাপ্ত সাপেক্ষ হোয়াইক্যংইউনিয়নের কাঠাখালী, তুলাতলী, লম্বাবিল, খারাংখালী, মিনাবাজার, হ্নীলা ইউনিয়নের নাইক্যংখালী, হোয়াব্রাং, সিকদার পাড়া, ফুলের ডেইল, চৌধুরী পাড়া, রঙ্গিখালী, আলীখালী, লেদা, জাদিমোরা, দমদমিয়া, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের জালিয়ার দ্বীপ, জালিয়া পড়া, সাবরাং ইউনিয়নের মৌলভী পাড়া, হারিয়াখালী, নয়াপাড়া এবং সাগরের লবণ-পানি প্রাপ্ত সাপেক্ষ শাহপরীরদ্বীপের কচুবনিয়া, কাঁটাবনিয়া, মিস্ত্রী পাড়া এলাকার ৫ হাজার ৩শ’ ৭১ একর লবণ মাঠে কর্মরত চাষীদের মুখে হাসি ফুটে উঠে। অনেকে আনন্দের অতিশয্যে নেচে উঠে। কেউ কেউ কৃতজ্ঞতায় কোরানখানীর আয়োজন করে।

হোয়াইক্যংয়ের লম্বাবিল এলাকার চাষী রশিদ জানান, ‘আগর বছর আর ইয়ার আগরত ১শ’ ৪০ কানিত (১ কানি= ০.৪ একর) চাষ গজ্জিলাম। দু’নি বছর গুনারী (লোকসান) হাইয়ি। এতল্লা এ বছরত ৭০ কানি গজ্জি।’ তিনি আরো বলেন, ‘এহন পর্যন্ত হন নুন বেচি ন’ফারি। ১ মণ নুন তুইলতে ১শ’ কুড়ি টিঁয়া খরচ অইয়ে। তয় কিনত চাদ্দে ৯০ টিঁয়া।’ তিনি উর্ধ্বে হাত তুলে বলেন, ‘সরগাররে আল্লা রহমত দিয়ে। ফুনিদ্দে ২শ’ ৬০ টিঁয়াদদ্দরে নুন বেচি ফাইজ্জুম। খুব খুশী লা’র অভাই।’

সাবরাংয়ের হারিয়াখালী এলাকার লবণ ব্যবসায়ী এম হোছাইন হেলালী এ বছর উৎপাদিত ৫৫ হাজার টন লবণ টেকনাফের বিভিন্ন লবণ মাঠে খোলা আকাশের নীচে অবিক্রিত অবস্থায় মওজুদ রয়েছে জানিয়ে বলেন, ‘উচিত মুল্য না পাওয়াতে চাষীরা লবণ বিক্রি করতে উৎসাহ হারিয়েছে। তবে আশার কথা, সরকার মণপ্রতি ২শ’ ৬০ টাকা দরে লবণ বিক্রির যে ঘোষণা দিয়েছে তা যদি বাস্তবায়ন হয়- আগামীতে চাষীরা পূর্ণ উদ্যোমে আরো বেশী লবণ চাষে আগ্রহী। হবে।’

কয়েকজন লবণ ব্যবসায়ী জানান, ‘সরকারের সময়োচিত সিদ্ধান্তে টেকনাফের লবণ চাষীরা তাদের উপর্যপোরী ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে।