প্রেসক্রিপশন না পাওয়া, ডাক্তার দেখাতে না পারা, বিশেষ করে ওষুধের দাম বেশি হওয়ার কারণে অনলাইনে ওষুধ কেনা বিশ্বের অনেক দেশে এখন অনেক জনপ্রিয়। ব্রিটিশ এক নারীও কম দামে ওষুধ কিনতে অনলাইনের ওপর নির্ভর করেছিলেন। বাংলাদেশ থেকে অনলাইনের মাধ্যমে ‘হেপাটাইটিস সি’ নিরাময়ের ওষুধ কিনেছিলেন জো শারাম নামে এক ব্রিটিশ নারী। আর এই ওষুধেই তার রোগমুক্তি হয়েছে। বিবিসি বাংলা এক খবরে জানায়, যুক্তরাজ্যে হেপাটাইটিস সি আক্রান্ত প্রায় দুই লাখ পনের হাজারের মতো রোগী রয়েছে, যাদের একজন জো শারাম। তার বয়স যখন ২০ বছর তখন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হন তিনি। ভাইরাসটি শনাক্ত না হওয়ায় অন্য অনেকের মতো এই ভাইরাস বহন করেই বছরের পর বছর চলছিলেন তিনি। জো শারাম বলছিলেন, আমি অফিসের চেয়ারেই ঘুমিয়ে পড়তাম, স্মৃতিজনিত অনেক সমস্যাও হচ্ছিল আমার। এছাড়াও হজমে সমস্যা হচ্ছিল, ঘৃণা মনোভাব জাগছিল। এরপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বের হলো আমার দেহে হেপাটাইসিস সি ভাইরাস রয়েছে। তখন বুঝলাম, এ কারণেই আমি বহু বছর ধরে বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছি। হেপাটাইটিস সি ভাইরাস নিরাময়ে যে ওষুধ পাওয়া যায় ইংল্যান্ডে তার খরচ জোগাতে মোটামুটি হিমশিম খেতে হয় ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসকে। প্রতি রোগীর জন্য প্রায় ১০ হাজার পাউন্ড খরচ হয় সংস্থাটির, আর এ কারণে শুধুমাত্র বেশি অসুস্থ রোগীদেরই এ ওষুধ দেওয়া হয়। জো শারাম যেহেতু খুব বেশি অসুস্থ ছিলেন না তাই তিনিও ওই ওষুধ কিনতে পারেননি। সে কারণে তিনি নির্ভর করলেন অনলাইনের ওপর এবং অনলাইনেই সস্তা দামের ওষুধ কিনলেন বাংলাদেশ থেকে। এতে তার খরচ পড়েছিল প্রায় এক হাজার পাউন্ড। তিনি বলেন, আপনিতো দামের জন্য আপনার জীবনকে হুমকির মধ্যে রাখতে পারেন না, তাই না? কিন্তু ওই ওষুধ কাজ করবে কিনা সেটা না জেনে কিভাবে সেটা কিনলেন তিনি? আসলে আমাকে একটা সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল। শারিরীক সমস্যাগুলো নিয়ে চলতে আর ভালো লাগছিলো না। আসলে এটা আমার পছন্দ ছিল, এটা অনেকটা বাতাসে কয়েন ছুঁড়ে দেওয়ার মতো-বলছিলেন জো। গত নভেম্বর মাসে তিনি তার ওষুধের কোর্স শেষ করেন। এরপর তিনি আবার কিছু রোগ নির্ণয় পরীক্ষা করান। গত ১৮ই ফেব্রুয়ারি সেই ডায়াগনসিস রিপোর্ট হাতে পেয়ে জো দেখেন তার রক্তে হেপাটিাইসিস সি ভাইরাসের কোনো লক্ষণ ধরা পড়েনি। এখানে ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো যে দামে ওষুধ বিক্রি করছে তার তুলনায় অনেক কম দামে আমি ওষুধ কিনলাম। অথচ সেটা কাজও করলো। আর প্রত্যেকেরই সুস্থ হওয়ার অধিকার আছে, যদি সেটা সম্ভব হয়, বলছিলেন জো।
43 0 0 0